জেলা প্রশাসন এখনও পানিবন্দি পরিবার বা মানুষের তথ্য না জানালেও বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, গাইবান্ধা জেলার সদরে ৫টি গ্রাম, সুন্দরগঞ্জে ১৫টি, ফুলছড়িতে ১৫টি ও সাঘাটাতে ১৫টি গ্রাম পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বন্যার ধকল কাটাতে না কাটাতে এই চার উপজেলার প্রায় ৫০ হাজার মানুষ ফের পানিবান্দি হয়ে পড়েছে। জানা গেছে, গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার দুই লক্ষাধিক মানুষ বন্যার অতঙ্কে রয়েছেন। ব্রহ্মপুত্র নদের ডানতীর ঘেঁষা বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধটি চরম হুমকির মুখে পড়েছে। ফুলছড়ি উপজেলার গজারিয়া, খাটিয়ামারী ইউনিয়নের বেশিরভাগ এলাকা বন্যার পানিতে নিমজ্জিত। এ উপজেলার প্রায় ১৫টি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। ফুলছড়ি উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নের বাসিন্দারা জানান, বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধটি মেরামতে সঠিকভাবে কাজ করা হলে বড় ধরনের বন্যাতেও ভেঙে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকতো না। পানি উন্নয়ন বোর্ড শুকনো মৌসুমে ঢিলেঢালা কাজ করে আর বন্যা এলে দ্রুত কাজ শেষ করে। ফলে বাঁধগুলো পানির চাপে ভেঙে যায়। বাঁধ ভেঙে গেলে বাঁধের পশ্চিম পাশে ফুলছড়ি উপজেলা প্রশাসনিক ভবনসহ সদর, সাঘাটা ও গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার কয়েক লক্ষাধিক মানুষ বন্যার কবলে পড়বে। পানি বৃদ্ধির ফলে সাঘাটা উপজেলার হলদিয়া ও জুমারবাড়ী ইউনিয়নের সাঘাটা উপজেলার হলদিয়া, পালপাড়া, চিনিরপটল, চকপাড়া, পবনতাইড়, থৈকরপাড়া, বাঁশহাটা, মুন্সিরহাট, গোবিন্দি, নলছিয়াসহ ১৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। সুন্দরগঞ্জ উপজেলার চণ্ডিপুর, কাপাসিয়া, তারাপুর, বেলকা, হরিপুর ও শ্রীপুর গ্রাম বন্যার পানিতে ডুবে গেছে। এ উপজেলার ১৫টি গ্রামের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এই উপজেলার চলাঞ্চলের মানুষ নৌকায় রাত্রি যাপন করছেন। সুন্দরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও ভূমি অফিসার শাকিল আহম্মেদ জানান, উপজেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির মিটিং ডাকা হয়েছে। সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বন্যার কবলিত মানুষদের জন্য জেলা প্রশাসকের নির্দেশনা অনুযায়ী দুর্যোগ মোকাবিলার সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। ফুলছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবু রায়হান দোলন বলেন, বন্যার স্থায়ীত্ব ও ভয়াবহতা উপলব্ধি করে উপজেলা প্রশাসন সর্বাত্বক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত খাদ্যসামগ্রী মজুদ রাখা হয়েছে। এছাড়া বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধটি রক্ষায় স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান-মেম্বার ও স্বেচ্ছাসেবকদের সমন্বয়ে মনিটরিং কমিটি গঠন করা হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোখলেছুর রহমান জানান, তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র ও ঘাঘট নদীর পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বৃদ্ধির ফলে ব্রহ্মপুত্র বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা একেএম ইদ্রিস আলী বলেন, পর্যাপ্ত পরিমাণ ত্রাণ সামগ্রী মজুত আছে। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমাদের যথেষ্ট প্রস্তুতি রয়েছে। গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক আব্দুল মতিন জানান, জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির জরুরি সভার মাধ্যমে বন্যা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। বন্যা কবলিত মানুষ যেকোনো প্রয়োজনে কন্ট্রোল রুমের (০১৭৪৬৪৯৯৩৪২/০৫৪১৫১৩৮) নম্বরে যোগাযোগ করলে সমস্যা সমাধানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
@ SOMOYBNGLAR # কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য।