অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা কর্তৃপক্ষের ।
মোঃ রুবেল ইসলাম তাহমিদ”স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ,মুন্সীগঞ্জ থেকে
প্রতি বছরের মতোই লৌহজংয়ের মানচিত্র একটু একটু করে গিলে খাচ্ছে পদ্মায়। গেল একমাস ধরে অল্প অল্প করে নদী ভাঙন দেখা দিলে আজ বৃহস্পতিবার ভোর থেকে পদ্মা নদীর ভাঙন তীব্র হয়ে দেখা দেয়।
কয়েকদফা নদী ভাঙনের কবলে পড়ে বিলীন হয়ে গেছে পদ্মা রিসোর্টের অর্ধেক এলাকা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ায় রিসোর্টটি আর সচল রাখা সম্ভব হচ্ছে না এখানে কর্তৃপক্ষের।
আর বেড়াতে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না ভ্রমণপিপাসুদের।পদ্মা নদীর চরে অবস্থিত,পদ্মা রিসোর্টের ১৬টি ঘরের মধ্যে দুইটি নদীতে বিলীন হওয়ার পর বাকি ঘরগুলোও সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চলছে।বৃহস্পতিবার ভোর থেকে ভাঙনের তীব্র তা বেশির পরিমানে দেখা দিলে বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে,রিসোর্টের অর্ধেক এলাকা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ায় দিশেহাড়া সংশ্লিষ্টারা ।
বিক্রমপুরের দর্শনীয় স্থান গুলোর একটি এ পদ্মা রিসোর্ট এটি বিলিন হলে । এখান কর্মরত প্রায় ২৫টি পরিবারের আয়ের দিক বন্ধ হয়ে এখন হিমশিম পোহাতে হবে তাদের।
পদ্মা রিসোর্টের পরিচালক সাদেক হোসেন মান্না জানান, ১৮ বছর আগে চরটি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গিয়েছিল। এরপর ২০০২ সালে ফের জেগে উঠে কাগজে কলমে এ চরটি বড় নওপাড়া নামে পরিচিত হয়। তারপর ২০০৭ সালে এখানে নিজস্ব মালিকানাধিন জমিতে স্থাপন করা হয় পদ্মা রিসোর্ট।
গেল এক সপ্তাহ ধরে রিসোর্টের নদীপাড়ের জায়গায় পদ্মার ভাঙন দেখা দেয়। তীব্র স্রোত বৃদ্ধি ও ভাঙন শুরু হলে ভেতরের মূল কটেজ রোম পর্যন্ত এসে পড়ে। দুর্ঘটনা এড়াতে পর্যটকের আসা বন্ধ করে দেওয়ার ঘোষনা দেয়া হয়েছে । ইতিমধ্যে ২টি কটেজ ঘর, বসার স্থান, বাগান, ৪০ শতাংশের একটি মাঠ পদ্মায় বিলীন হয়ে গেছে।
১৬টি কটেজ ঘরের মধ্যে ১৪টি আছে যা সরানো হচ্ছে নিরাপদ স্থানে। কিন্তু, শ্রমিক সংকট আছে। তাই এখন নতুন জায়গা নির্বাচন করে কটেজগুলো অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা চলছে। নতুন কোনো জায়গায় আবার শুরু করতে হবে।কিন্তু, সেটা কবে সম্ভব হবে তা এখনই বলা যাচ্ছে না বলেও জানান তিনি।
লৌহজং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও) মো. হুমায়ুন কবির জানান, পদ্মা নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় চরে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙনের কবলে পড়ে রিসোর্টের বেশকিছু অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আপাতত বন্ধ রয়েছে রিসোর্টটি। তবে এখন বিলীন জমির পরিমাণ নির্ণয় করা যায়নি বলেও জানান তিনি।
অপর দিকে একই ইউনিয়নের ফুলকুচি গ্রামের দুটি মসজিদ, একটি মাদ্রাসা, একটি কমিউনিটি ক্লিনিক, একটি কবরস্থান,বাজারসহ ৩টি গ্রামের বেশকিছু স্থাপনা হুমকির মুখে।
আর ভাঙ্গন রোধে স্থায়ী বাধ নির্মানের দাবী জানিয়েছেন জনপ্রতিনিধি সহ এলাকাবাসী। পদ্মা কখনো প্রমত্তা,কখনো রাক্ষুসে। আবার কখনো বা সর্বনাশা তবে এর শাখা নদী লৌহজংয়ের গোরগঞ্জ ও তান্ডব নীলায় এর থেকে কম নয়।
গত কদিন ধরেই নদীতে প্রচন্ড স্রোত থাকায় রাক্ষুসে হয়ে উঠেছে (গোরগঞ্জ) পদ্মানদী। এরি মধ্যে নদী গর্ভে চলে গিয়েছে প্রায় ৭একর ফসলীজমি ও ১৫ টি বসত বাড়ি। বিগত কয়েক বছরে এ নদী গিলে নিয়েছে প্রায় ৭০ একর আবাদী জমিসহ অসংখ্য পরিবারের গাছপালা ও ঘরবাড়ী। নতুন করে আবারো দেখা দিয়েছে নদী ভাঙ্গন। ভাঙ্গনে সব হারিয়ে ইতিমধ্যে অন্যত্র চলে গেছে প্রায় ৫০ টি পরিবার।
ভাঙ্গন আতংক বিরাজ করছে খিদিরপাড়া ইউনিয়নেরফুলকুচি,রসকাঠী,বাসুদিয়া,খলাপাড়া গ্রামের অসংখ্য পরিবারের মাঝে। ভাঙ্গনের কবলে পড়ে যে কোন সময়ে নদী গর্ভে বিলীন হতে পারে ফুলকুচি দারুল উলুম হাফিজিয়া মাদ্রাসা,মসজিদ,কবরস্থান,বাজার ও কমিউনিটি ক্লিনিকসহ প্রায় শতাধীক পরিবারের ঘরদুয়ার। গেলো কদিনের ভাংগনে কবলে ক্ষক্ষিগ্রস্ত হয়েছে খলাপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়,বাসুদিয়া পাকা রাস্থাসহ বেশ কিছু এলাকা। হুমকীর মূখে রয়েছে ইউনিয়ন পরিষদের ভবনটিও।
নদী ভাংগনে ক্ষতিগ্রস্ত ফুলকুচি গ্রামের হাজী আব্দুল হক, মো: মাকছুদ রানা ও শরিফ উদ্দিন বাবু সহ এলাকাবাসীরা বলেন, তাদের বহু যায়গা জমি কেড়ে নিয়েছে এ গোরগঞ্জ নদী।
এ ব্যাপারে সরকারের পক্ষ থেকে স্থায়ী কোন ব্যাবস্থা গ্রহন না করা হলে এ নদীর হাত থেকে করা যাবেনা এই ইউনিয়নের ৩ টি গ্রামের কয়েক হাজার পরিবারের ভিটেমাটি।
@ SOMOYBNGLAR # কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য।