শিমুলিয়া-বাংলাবাজার রুটে টানা ৬ দিন ধরে বন্ধ ফেরি চলাচল।
আমাগো বেঁচাকেনাও নাই,অনেকে দোকান বন্ধ করে বাড়ি চলে গেছে।’
মোঃ রুবেল ইসলাম তাহমিদ মাওয়া মুন্সীগঞ্জ
তীব্র স্রোতের কারণে শিমুলিয়া- বাংলাবাজার নৌরুটে ছয় দিন ধরে বন্ধ রয়েছে ফেরি চলাচল। গত বুধবার(১৮ আগস্ট) দুপুর থেকে একটানা ফেরি চলাচল বন্ধ থাকায় এই নৌরুট ব্যবহারকারীরা ভোগান্তিতে পরেছেন। জরুরী প্রয়োজনে কোন রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে ঢাকা যেতে হলে দীর্ঘপথ ঘুরে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া হয়ে ঢাকা যেতে হচ্ছে। এদিকে বাংলাবাজার রুট বন্ধ থাকায় গাড়ির অতিরিক্ত চাপ তৈরি হয়েছে বিকল্প নৌরুটটিতে।
বিআইডব্লিউটিসি’র শিমুলিয়া ফেরি ঘাট সূত্রে জানা গেছে, সোমবার(২৩ আগস্ট) সহ মোট ছয়দিন দিন ধরে নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধ আছে। বাংলাবাজার ঘাট থেকে শিমুলিয়া আসতে মাঝ পদ্মায় প্রবেশের পথে তীব্র স্রোতের কবলে পরে ফেরিগুলো। স্রোতের ঘুর্ণিপাক থাকায় পদ্মাসেতুর পিলার অতিক্রম করা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠে। এই অবস্থায় ফেরির চালকেরা ফেরি চালাতে অনীহা প্রকাশ করলে দূর্ঘটনা এড়াতে বন্ধ রাখা হয়েছে ফেরি চলাচল। ফেরির চালকদের সাথে আলাপ করে জানা গেছে, ‘স্রোত বাড়লে ফেরি চলাচলের জন্য বিআইডব্লিউটিএ একটি রুট নির্ধারিত করে দিয়েছে। তবে বাংলাবাজার থেকে ছেড়ে যাওয়া ফেরিগুলো ওই রুট ধরে এগিয়ে গিয়ে পদ্মাসেতুর ১০ নম্বর পিলার হয়ে মূল নদীতে প্রবেশ করবে। কিন্তু মাগুরখন্ড চ্যানেল দিয়ে এগিয়ে গিয়ে পদ্মা পাড়ি দিতে গেলে ওই স্থানের মাঝ বরাবর ডুবচর থাকায় পানির গতি দুই দিক দিয়ে প্রবল বেগে প্রবাহিত হচ্ছে। পদ্মায় পানি প্রবাহের গতি-প্রকৃতি মূহুর্তেই পরিবর্তন হয়। কখনো দেখা যায় চ্যানেলের বামপাশে স্রোত বেড়ে ডানপাশে কমেছে। আবার কিছুক্ষণ পরেই তার উল্টো হচ্ছে। এতে করে সেতুর পিলারের কাছাকাছি এসে বেশির ভাগ সময় ঘুর্ণিস্রোত এবং বাতাসের কবলে পরতে হয়। তখন ফেরির নিয়ন্ত্রণ রাখা সম্ভব হয় না। এতে করে বড় ধরনের দূর্ঘটনাও ঘটতে পারে।’ বাংলাবাজার ফেরিঘাটের দোকানিরা জানান,‘গত ছয় দিন ধরে কোলাহল নেই ফেরিঘাটে। দোকান খুলে শুধুই বসে থাকা। ফেরির লোকজন আর পুলিশ আসে। টুকটাক কেনাবেচা করি তাদের কাছে। লোকসানের মধ্যে আছি।’ হোটেল ব্যবসায়ীরা বলেন,‘ফেরি বন্ধ। টার্মিনালে কোন গাড়ি নাই। আমাগো বেঁচাকেনাও নাই। অনেকে দোকান বন্ধ করে বাড়ি চলে গেছে।’ বিআইডব্লিউটিসির শিমুলিয়া ঘাটের মেরিন কর্মকর্তা(মো. আহমদ আলী বলেন,‘পানি বৃদ্ধির ফলে নৌপথে স্রোত আরো বেড়েছে। ফেরি চলাচলের উপযোগী হতে আরও সময় লাগবে। আপাতত বন্ধই থাকছে। পদ্মার পানি, স্রোত এসব প্রকৃতির বিষয়। তাই ফেরি ঠিক কবে চালানো যাবে তা বলা যাচ্ছে না।’