ঘরে ফিরছে মানুষ, ফেরিঘাটে ব্যাপক চাপ আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতরকে কেন্দ্র করে ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলা থেকে ঘরমুখো মানুষ ফিরতে শুরু করেছে। যাত্রী-যানবাহনের চাপ বেড়েছে শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌপথে, আজ শুক্রবার সকাল থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত ।
শিমুলিয়া ঘাটে ঘরমুখো মানুষের উপচে পড়া ভীড় বেড়েছে
রুবেল ইসলাম তাহমিদ, শিমুলিয়া, মুন্সীগঞ্জ।
নাড়ীর টানে বাড়ি ফেরা মানুষের ভিড় বেড়েছে শিমুলিয়া- বাংলাবাজার ঘাটে। শুক্রবার(২৯ এপ্রিল) ভোর থেকে শিমুলিয়া বাংলাবাজার-নৌরুটে লঞ্চ ও স্পিডবোটে যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড় রয়েছে। লঞ্চে গাদাগাদি করে বাংলাবাজার ঘাটে গিয়ে নামছেন যাত্রীরা। শিমুলিয়া ঘাটের দূরপাল্লার যানবাহনের কাউন্টারেও যাত্রীদের ভিড় নামাউঠার।লাইন। শিমুলিয়া ঘাট সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার সকাল থেকেই ঘাট এলাকায় ঘরমুখো যাত্রীদের ভিড় রয়েছে। প্রতিটি নৌযানেই যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড় । লঞ্চ ও স্পিডবোট যাত্রীরা গন্তব্যের যাবার জন্য রওয়ারনা হচ্ছেন। বাংলাবাজার ঘাটে গিয়ে দূরপাল্লার যানবাহনে উঠতে বাস কাউন্টারের সামনে যাত্রীদের লাইনেও দাঁড়াতে হচ্ছে। এদিকে যাত্রীদের চাপ নিয়ন্ত্রণে শিমুলিয়া-বাংলাবাজার- নৌরুটে রাত দশটা পর্যন্ত চালু থাকছে লঞ্চ চলাচল।
সূত্রটি জানায়, এ বছর ঘরমুখো যাত্রীদের যাত্রা নির্বিঘ্ন করতে রাত সাড়ে ৮ টার পরিবর্তে ১০ টা পর্যন্ত লঞ্চ চলাচল করবে। ভোর সাড়ে ৬ টা থেকে টানা প্রায় ১৫ ঘন্টা পর্যন্ত লঞ্চ চলবে। এবং ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলবে স্পিডবোট। বাংলাবাজার লঞ্চঘাট সূত্র জানায়,’শুক্রবার ভোর থেকে লঞ্চ,স্পিডবোটে যাত্রীদের প্রচন্ড ভীড়। ফেরিতে উঠতেও গাড়ির লম্বা সিরিয়াল রয়েছে। লঞ্চগুলোতে ধারন ক্ষমতার চেয়েও অধিক যাত্রী নিয়ে শিমুলিয়া থেকে লঞ্চগুলো বাংলাবাজার ঘাটে এসে ভিড়ছে। যাত্রীচাপ বাড়ায় বাংলাবাজার ঘাট থেকে অনেকটাই যাত্রীশূন্য লঞ্চ শিমুলিয়ার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাচ্ছে। শিমুলিয়া ঘাটের যাত্রীরা বলছেন ‘নৌযানে উপচে পড়া ভিড়। লঞ্চে গাদাগাদি অবস্থা। তবে বাড়ি ফিরতে পারছি এটাই বড় বিষয়।’ আরেক যাত্রী বলেন,’এমনিতেই প্রচুর গরম। তার মধ্যে নৌযানে যাত্রীদের প্রচুর ভীড়। পদ্মা পার হতে ভীষন কষ্ট হচ্ছে যাত্রীদের। গরমে হাঁপিয়ে উঠছেন অনেকে।’ বিআইডব্লিউটিসি’র শিমুলিয়া ঘাট সূত্রে জানা গেছে, শিমুলিয়া নৌরুটে বুধবার থেকে রাত দিন ২৪ ঘন্টা ফেরি চলাচল শুরু করেছে। বৃহস্পতিবার রুটে রোরো ফেরি এনায়েতপুরি নামের আরো একটি ফেরি যুক্ত হয়েছে। নৌরুটে ২৪ ঘন্টা ৬ টি ফেরি চলবে। এছাড়া মাঝিরকান্দি ঘাট দিয়ে দিনের বেলা চলবে আরো ৪ টি ফেরি। দুইরুটে মোট ১০ টি ফেরি দিয়ে ঈদযাত্রায় গন্তব্য ফেরা নিশ্চিত করবে কর্তৃপক্ষ। তবে মাঝিরকান্দি রুটে রাতে মাত্র ১ টি ফেরি চালু রাখা হবে বলে জানিয়েছে। বিআইডব্লিউটিসি’র শিমুলিয়া ঘাট ফেরি ঘাটের মেরিন আহমেদ আলী বলেন,’ যাত্রীদের যাত্রা নির্বিঘ্ন করতে ফেরি কুমিল্লা, কুঞ্জলতা, ক্যামেলিয়া, বেগম সুফিয়া কামাল, বেগম রোকেয়া ও এনায়েতপুরিসহ মোট ৬ টি ফেরি শিমুলিয়া নৌরুটে চলাচল ২৪ ঘন্টাই রয়েছে।’ বিআইডব্লিউটিএ’র বাংলাবাজার লঞ্চ ঘাটের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর আক্তার হোসেন বলেন,’আবহাওয়া স্বাভাবিক থাকায় লঞ্চে যাত্রীদের চাপ বেশি। ৮৭ টি লঞ্চ চালু রয়েছে। প্রতিদিন রাত ১০ টা পর্যন্ত লঞ্চ চালু থাকছে।’ তিনি আরও বলেন,’ আমরা নৌযানে বাড়তি যাত্রী বহনে সব সময় নিষেধ করে থাকি। তাছাড়া বাংলাবাজার ঘাট থেকে ধারণ ক্ষমতার বেশি যাত্রী নেয়া হয় না। তবে যাত্রীচাপ বেশি থাকায় শিমুলিয়া ঘাট থেকে লঞ্চে কিছু বাড়তি যাত্রী আসছে।’
এদিকে শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌরুটে অতিরিক্ত যাত্রী বহনের দায়ে দুই লঞ্চ মালিককে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এম রাকিবুল হাসান এই জরিমানা আদায় করেন।
ঈদের বাকি আর কয়েকদিন। সে হিসেবেই দরজায় কড়া নাড়ছে পবিত্র ঈদুল ফিতরের খুশি, আর ঈদের এ খুশি ভাগাভাগি করে নিতে গ্রামের বাড়ি ছুটছেন দক্ষিনবঙ্গের ২৩ জেলার মানুষ শিমুলিয়া ঘাটে হয়ে ।