ঈদের আগেই পদ্মাসেতুতে চলতে পারে মোটরসাইকেল, কমবে ভোগান্তি চালকদের।
সময় বাংলার ||
শনিবার, ১৮ মার্চ, ২০২৩, ১১.৫৪ এএম
ঈদের আগেই পদ্মাসেতুতে চলতে পারে মোটরসাইকেল, কমবে ভোগান্তি চালকদের।
রুবেল ইসলাম তাহমিদ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট,সময় বাংলার |
পদ্মাসেতুতে গেল ২৫ জুন ২০২২ থেকে বাস-ট্রাকসহ প্রায় সব ধরনের যান চলাচল করছে। তবে বন্ধ আছে মোটরসাইকেল চলাচল,পদ্মাসেতু কর্তৃপক্ষের আদেশে। সেতু উদ্বোধনের পর প্রথম দিনে অন্তত ৪৫ হাজার যানবাহন পারাপার হয়। এর মধ্যে মোটরসাইকেল ছিল ২৭ হাজার। ওই দিন রাতে সেতুতে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় দুই তরুণ নিহত হন। এরপর সরকারের উচ্চপর্যায়ের সিদ্ধান্তে মোটরসাইকেল চলাচল বন্ধ করে দেয় সেতু কর্তৃপক্ষ। এতে মোটরসাইকেল চালকেরা বিকল্প হিসেবে ট্রাকে করে মোটরসাইকেল পারাপার করছেন বর্তমানেও। সেতুতে মোটরসাইকেলের নির্ধারিত টোল ১০০ টাকা হলেও ট্রাকে একটি মোটরসাইকেল পার করতে খরচ হচ্ছে ৮০০ থেকে ১ হাজার ১২০০শ -টাকা। এ অবস্থায় রাজস্ব হারাচ্ছে সেতু কর্তৃপক্ষ। যার ফলে মোটরসাইকেলচালকদের আট–দশ গুণ বেশি টাকা গুনতে হচ্ছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে সেতু কর্তৃপক্ষের এক প্রকৌশলী জানিয়েছেন, পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেল চলাচলের অনুমতি দেওয়ার বিষয়ে তাঁরা প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এ–সংক্রান্ত নথিপত্র প্রস্তুত করে সরকারের উচ্চপর্যায়ে পাঠানো হচ্ছে। অনুমতি পেলে ঈদুল ফিতরের আগেই পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেল চলতে পারে। মোটরসাইকেল সেতুর দুই প্রান্তের আলাদা দুটি লেন দিয়ে চলাচল করবে বলে ও জানিয়েছেন ওই প্রকৌশলী ।
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, ৬ মার্চ সচিবালয়ের সভাকক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন, আপাতত পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেল চলতে দেওয়া নিয়ে কোনো ভাবনা নেই। পদ্মাসেতু কর্তৃপক্ষের ওই প্রকৌশলী আরও বলেন, গত সপ্তাহে সেতুর নিরাপত্তা নিয়ে জাজিরার শেখ রাসেল সেনানিবাসে একটি সভা হয়েছে। ওই সভায় সেতু কর্তৃপক্ষ, সেনাবাহিনী, পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সভায় সেতুতে মোটরসাইকেল চলাচলের বিষয়ে আলোচনা হয়। তবে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। সবদিক ভেবে সেতুতে মোটরসাইকেল চলাচলের ব্যাপারে লিখিতভাবে সরকারের উচ্চপর্যায়ে তুলে ধরার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। সেতুতে মোটরসাইকেল চলাচলের অনুমতি দেওয়ার সম্ভাবনা আছে। সিদ্ধান্তটি সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে আসবে। তাঁরা এ–সংক্রান্ত নথিপত্র প্রস্তুত করেছেন। অনুমতির জন্য আরও কয়েক দিন অপেক্ষা করতে হবে। লক্ষ্মীকান্ত বিশ্বাস, নির্বাহী প্রকৌশলী, পদ্মাসেতু কর্তৃপক্ষ সূত্র জানায়, গত বছরের ২৫ জুন পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পরদিন সেতুতে যান চলাচল শুরু হয়। প্রথম দিনে অন্তত ৪৫ হাজার যানবাহন পারাপার হয়। এর মধ্যে মোটরসাইকেল ছিল ২৭ হাজার। ওই দিন রাতে সেতুতে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় দুই তরুণ নিহত হন। এরপর সরকারের উচ্চপর্যায়ের সিদ্ধান্তে মোটরসাইকেল চলাচল বন্ধ করে দেয় সেতু কর্তৃপক্ষ। অন্যদিকে পদ্মাসেতু চালু হওয়ায় শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌপথে ফেরি ও লঞ্চ চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। এতে বিপাকে পড়েন মোটরসাইকেলে ঢাকায় যাতায়াত করা দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২৩ জেলার মানুষ।পদ্মাসেতু কর্তৃপক্ষের টোল প্লাজা ও সংযোগ সড়কের (সংরক্ষণ ও সার্ভিস) নির্বাহী প্রকৌশলী লক্ষ্মীকান্ত বিশ্বাস বলেন, সেতুতে মোটরসাইকেল চলাচলের অনুমতি দেওয়ার সম্ভাবনা আছে। সিদ্ধান্তটি সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে আসবে। তাঁরা এ–সংক্রান্ত নথিপত্র প্রস্তুত করেছেন। অনুমতির জন্য আরও কয়েক দিন অপেক্ষা করতে হবে।অন্যদিকে মুন্সিগঞ্জের লৌহজং উপজেলার শিমুলিয়া ও মাদারীপুরের বাংলাবাজার এবং শরীয়তপুরের মাঝিকান্দি নৌপথে লঞ্চ চলাচল বন্ধ রেখেছে সেতু উদ্বোধনের পর থেকে । তার আগে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)।সন্ধ্যা ৭টার পরথেকে দুর্ঘটনা এড়াতে লঞ্চ চলাচল বন্ধের এ ঘোষণা দেয়।সেতু উদ্বোধনের পর শিমুলিয়া নদীবন্দরে লঞ্চ চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়। প্রতিদিনের মতো স্পিডবোটও চলাচল বন্ধ রয়েছে । সন্ধ্যা ছয়টার পর থেকে এই রুটে লঞ্চ চলাচল বন্ধ হওয়ায় ও পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেল চলাচলে নিষেধাজ্ঞা থাকায় চালক ও লঞ্চ যাত্রীদের পারাপারের চরম ভাবে ক্ষতি হচ্ছে বলে একাথিক যাত্রী দের অভিযোগ রয়েছে। মোটরসাইকেল চলকরা আরো বলেন, ঈদের আগেই পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেল চলাচল করতে দিলে সবাই মিলে সোচ্চার আছি। সতর্কতার সঙ্গে সেতুহয়ে যাতায়াত করবো এতে কোনো ধরনের দুর্ঘটনা না ঘটে।