সিরাজদিখানে বসত বাড়ী ও ফসলী জমির উপর দিয়ে রাস্তা নির্মাণের পায়তারার অভিযোগ!।

সময় বাংলার, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | মুন্সীগঞ্জ  |

মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখানে ব্যক্তি মালিকানাধীন বসত বাড়ী ও ফসলী জমির উপর দিয়ে জোরপূর্বক বেসরকারী রাস্তা নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে এক ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে। গত ৩০ মার্চ ওই ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা চেয়ারম্যান বরাবর ভুক্তভোগী বসতবাড়ী, ফসলী জমির একাধিক মালিক ও গ্রামবাসী লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

অপরিকল্পিত ভাবে রাস্তাটি নির্মাণের কারণে জনদুর্ভোগের পাশাপাশী কৃষকরা তাদের তিন ফসলি জমির ক্ষতি সাধন হওয়াসহ গ্রামের বেশ কয়েকটি পরিবার ভিটা- মাটিহীন হয়ে পরবে মর্মে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।

লিখিত অভিযোগে বলা হয়, উপজেলার বালুচর ইউনিয়নের খাসমহল বালুচর ৬ নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্যের উদ্যোগে বেসরকারী ভাবে খাসমহল বালুচর গ্রামের পূর্ব পাশ দিয়ে জনদুর্ভোগের কারণ হবে এমন একটি রাস্তা নির্মানের চেষ্টা চলছে। রাস্তা নির্মাণের ফলে অনেক কৃষক তাদের তিন ফসলি জমির অস্তিত্ব সঙ্কটে পরবে এবং গ্রামের বেশ কয়েকটি পরিবার বসত ভিটা- মাটিহীন হবে। এছাড়া যেদিক দিয়ে রাস্তাটির কার্যক্রম অগ্রসর হচ্ছে, সেদিকে দিয়ে রাস্তা নির্মাণ হলে গ্রামবাসীর লাভের চাইতে ক্ষতিই বেশি হবে। অপরিকল্পিত ভাবে রাস্তা নির্মাণ বন্ধের দাবী দায়েরকৃত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।

স্থানীয় গ্রামবাসী জানায়, বালুচর ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডস্থ খাসমহল বালুচর গ্রামের মধ্য দিয়ে খাসনগর ব্রীজ থেকে রফিকুল ইসলাম মাষ্টারের বাড়ি পর্যন্ত প্রায় তিন কিঃ মিঃ কাবিখা প্রকল্পের আওতায় একটি সরকারী রাস্তা নির্মাণ করা হচ্ছে৷ রাস্তাটি নির্মান কাজ করছেন ইউপি সদস্য মোঃ রাসেল। স্থানীয় শ্রমিক দিয়ে কাজ করানোর কথা থাকলেও রাস্তার নির্মাণ কাজ ভেকু দিয়ে করা হচ্ছে। এছাড়া ইউপি সদস্য তার নিজ বাড়িতে রাস্তা নেওয়ার জন্য বিনা অনুমতিতে কারো বাড়ী কারো ফসলী জমির উপর দিয়ে রাস্তায় নির্মাণের পায়তারা করছেন।লিখিত অভিযোগ করার পর উপজেলা চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন আহমেদ দুই পক্ষকে নিয়ে বসে বিষয়টি সমাধান করার জন্য বালুচর ইউপি চেয়ারম্যান আওলাদ হোসেনকে নির্দেশ দেন। কিন্ত আজকে পর্যন্ত বসার কোন আলামত পেলাম না।

ভুক্তভোগীদের পক্ষে খাসমহল বালুচর গ্রামের বাসিন্দা আমির হোসেন বলেন, রাস্তাটি নির্মাণের কারণে আমাদের গ্রামের প্রায় সকলেরই সমস্যা হচ্ছে। আমরা সরকারের অনুমতি ছাড়া রাস্তা করার জন্য তাদেরকে জায়গা দিবো কেন? যদি তারা আমাদের অনুমতি ছাড়াই আমাদের সম্পত্তির উপর দিয়ে রাস্তা তৈরি করে তাহলে আমরা আমাদের সম্পত্তির মালিক হলাম কি করে? যথাযথ নিয়ম অনুসরণ করে যদি রাস্তা নিতে পারে নিবে নতুবা না। এ রাস্তায় আমাদের সকলেরই জায়গা পরবে তাই আমরা আমাদের সম্পত্তির সীমানার শেষ দিক দিয়ে রাস্তা দেওয়ার জন্য সকলের সম্মতিক্রমে রাজি হয়েছি।

অভিযুক্ত বালুচর ৬নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য মোঃ রাসেল বলেন, রাস্তা সঠিক নিয়মেই হচ্ছে। এখানে কাউকে কোন জোর জবস্তি করা হচ্ছে না। কাজে অনিয়ম করার কোন সুযোগ নেই। গ্রামের একজন ব্যক্তি ছাড়া সকলে রাস্তা নির্মাণের পক্ষে।

বালুচর ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ আওলাদ হোসেন বলেন, বিষয়টা নিয়ে আমরা আগামী বৃহস্পতিবার অথবা শুক্রবার বসবো। রাস্তার কাজ নিয়ম মতই হচ্ছে কারো জমি বা কারো বাড়িই কাটা হয় নাই। মাটি বিক্রির বিষয়টি মিথ্যা। স্থানীয় কিছু সংখ্যক ব্যক্তি তাদের নিজেদের ব্যক্তি স্বার্থে এসব কথা বলছে। শ্রমিক দিয়ে কাজ করবে শ্রমিক পাবে কই এখনতো শ্রমিক পাওয়া যায় না বললেই চলে।

এ ব্যপারে সিরাজদিখান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শরিফুল আলম তানভীর বলেন, আমি অভিযোগ পেয়েছি। যেহেতু রাস্তাটি পিআইও সেকশনের তাই উপজেলা পিআইও কর্মকর্তা আইমিন সুলতানাকে বলে দিয়েছি এবং বালুচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আওলাদ হোসেনকেও বলেছি যাতে উভয় পক্ষকে নিয়ে বসে সমাধান করে দেয়।