ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | সময় বাংলার | পাবনা
পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিবির কর্মী সন্দেহে তিন ছাত্রকে ধরে হলে নিয়ে মারধরের পর পুলিশে দিয়েছে ছাত্রলীগ। মঙ্গলবার রাতে ক্যাম্পাসের বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান হলে এই ঘটনা ঘটে। নির্যাতনের শিকার এক শিক্ষার্থীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পুলিশ বলছে ওই তিন ছাত্রের কাছ থেকে শিবিরের একটি ব্যক্তিগত রিপোর্ট বই পাওয়া গেছে। নির্যাতনের শিকার তিন ছাত্র হলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি দশম ব্যাচের ছাত্র ও পাবনার আটঘরিয়া উপজেলার ষাটগাছা গ্রামের আবুল কালাম আজাদের ছেলে আসাদুল ইসলাম (২৩), ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক প্রকৌশল (ইইই) ১১তম ব্যাচের ছাত্র ও নাটোরের বড়াই গ্রাম নগর গ্রামের রেজাউর করিমের ছেলে আজিজুল হক (২৪) এবং জনপ্রশাসন বিভাগের নবম ব্যাচের ছাত্র কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলা সদরের গোলাম রহমান (২৪)। তাঁরা তিনজনই শহরের অনন্তবাজার এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন। নির্যাতিতদেও মধ্যে গোলাম রহমানকে আহত অবস্থায় পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। নির্যাতনের শিকার শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মঙ্গলবার রাতেৃ বিশ^বিদ্যালয় মসজিদে তারাবির নামাজ শেষে বিশ্ববিদ্যালয় মাঠে বসে আড্ডা দিচ্ছিল।
এ সময় ছাত্রলীগ কয়েকজন নেতা কর্মী এসে তাদেও বিভিন্ন ভাবে প্রশ্ন করতে থাকে। এক পর্যায় তাদেও ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে নিয়ে গিয়ে তিনটি রুমে তিনজনকে আটকে স্ট্যাম্প, রড, হকিস্টিক, প্লাসসহ দেশীয় অস্ত্র দিয়ে নির্যাতন করে। খবর পেয়ে রাত ১২টার দিকে হলের প্রভোস্টকে নিয়ে প্রক্টর কামাল হোসেন সেখানে যান। তিনি থানায় খবর দিলে পুলিশ এসে ওই তিন ছাত্রকে থানায় নিয়ে যায়। সেখানে গোলাম রহমান অসুস্থ হয়ে পড়লে রাতেই তাঁকে পুলিশ পাহারায় পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। প্রক্টর কামাল হোসেন বলেন, খবর পেয়ে তিনি মঙ্গলবার রাত ১২টায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে যান। সেখানে দুই থেকে আড়াই শ ছাত্রকে হলের বাইরে উত্তেজিত অবস্থায় দেখতে পান তিনি। তাঁরা তিন ছাত্রকে আটক করে হইচই করছিলেন। উপস্থিত হলের ছাত্ররা জানান, শিবিরের ১৫ নেতা-কর্মী ক্যাম্পাসে গোপন বৈঠক করছিলেন। ছাত্ররা সেখানে গেলে শিবিরকর্মীরা দ্রুত পালানোর চেষ্টা করেন। এ সময় তিনজনকে আটক করে হলে আনা হয়। পরে তিনি খবর দিলে পুলিশ তিন ছাত্রকে থানায় নিয়ে যায়। পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ফরিদুল ইসলাম বাবু বলেন, ছাত্রশিবিরের ১৫ নেতা কর্মী ক্যাম্পাসে গোপন বেঠক করছিলেন। সাধারণ ছাত্ররাই তাঁদের ধাওয়া করেন। অন্যরা পালিয়ে যান। তাঁরা ওই তিনজনকে আটক করে হলে আনেন। খবর পেয়ে প্রক্টরের সঙ্গে তিনি হলে যান। তবে ওই শিক্ষার্থীদের কোন নির্যাতন করা হয়নি। নির্যাতনের বিষয়ে পাবনার পুলিশ সুপার আকবর আলী মুন্সি বলেন, আটককৃতরা কিভাবে আহত হল সেটি খতিয়ে দেখে দোষিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কৃপা সিন্ধু বালা বলেন, ওই তিন ছাত্রের কাছ থেকে শিবিরের একটি ব্যক্তিগত রিপোর্ট বই পাওয়া গেছে। এখন তিনজনের বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। তাঁদের বিরুদ্ধে শিবির ও নাশকতার কোনো অভিযোগ থাকলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
@ SOMOYBNGLAR # কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য।