‘
মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি
তিনটি থানকুনি পাতা ফজরের নামাজের আগে চিবিয়ে খেলে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ থেকে মুক্তি মিলবে’ এমনই গুজব ছড়িয়ে পড়েছে মুন্সীগঞ্জ জেলাসহ সারাদেশে।
করোনা ভাইরাসে আতঙ্কিত মানুষ গুজবে সাড়া দিয়ে গভীর রাতে ঘুম হারাম করে থানকুনি পাতা সংগ্রহে নেমে পড়ে সড়ক ও ঝাড়-জঙ্গলে। ইতোমধ্যে অনেকেই চিবিয়ে খেয়েছেনও এই পাতা।
মঙ্গলবার (১৭ মার্চ) দিবাগত রাতে মুন্সীগঞ্জের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে এমন গুজব। থানকুনি পাতা সংগ্রহকারী কেউ কেউ দাবি করেন, চরমোনাই পীর স্বপ্নে দেখেছেন থানকুনি পাতা খেলে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ থেকে মুক্তি মিলবে।
তবে চরমোনাই পীর মুফতি মো. রেজাউল করিমের সংগঠন ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশ, মুন্সীগঞ্জ জেলা শাখার আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব আল-আমিন খলিফা দাবি করেন, এটি সম্পূর্ণ গুজব। জামায়াত-শিবিরের কিছু কর্মী এই গুজব রটিয়ে হুজুরকে বিতর্কিত করতে চাচ্ছে।
থানকুনি পাতা সংগ্রহকারীরা জানান, গভীর রাতে মসজিদের মাইকে ঘোষণা করা হয় ‘ফজরের নামাজের পূর্বে তিনটি থানকুনি পাতা চিবিয়ে খেলে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ থেকে মুক্তি মিলবে’।
এছাড়াও আত্মীয় স্বজনরা বিভিন্ন জায়গা থেকে ফোনের মাধ্যমে এ তথ্য জানান তাদের। কেউ আবার থানকুনি পাতার গুণাবলি ফেসবুকে পোস্ট করেছেন। তাই সবকিছু যাচাই-বাছাই করেই তারা থানকুনি পাতা সংগ্রহ করতে গভীররাতে বের হয়েছেন মানুষজন।
অন্যদিকে, স্থানীয় সচেতন মহল গুজবে সাড়া না দিয়ে ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব প্রতিরোধে বিভিন্ন মতামত পোস্ট করছেন।
সচেতনমহলের একজন শেখ রাসেল ফখরুদ্দিন জানান, করোনা ভাইরাস বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ায় মানুষ এখন আতঙ্কিত। এ ভাইরাস প্রতিরোধে কেউ কোনো উপায় বললে সাধারণ মানুষ তা যাচাই-বাছাই না করে হুমড়ি খেয়ে পড়ে। সাধারণ মানুষদের বোকা বানানোর জন্য বিভিন্ন গুজব রটায় কিছু মহল। নিশ্চিত না হয়ে কোনো কিছু গ্রহণ করার থেকে সাধারণ মানুষদের সবসময়ই সতর্ক থাকতে হবে, না হলে ভয়াবহ কিছু অপেক্ষা করছে আমাদের জন্য।
এ বিষয়ে মুন্সীগঞ্জ সিভিল সার্জন ডা. আবুল কালাম আজাদ দৈনিক অধিকাকের জানান, এটি একটি সম্পূর্ণ গুজব। যদি করোনা ভাইরাসের সঙ্গে থানকুনি পাতার সম্পর্ক থাকত তাহলে আমাদের সভা, সেমিনার ও লিফলেটে উল্লেখ করা হতো। থানকুনি পাতার রস হারবাল মেডিসিন। আগে গ্রামগঞ্জে মানুষ বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধে তা খেয়ে থাকত। তবে করোনা ভাইরাসের সঙ্গে থানকুনি পাতার কোনো সম্পর্ক নেই।
এ দিকে মুন্সীগঞ্জের ছয়টি উপজেলায় ৮৫ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এদের সবাই বিদেশফেরত। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ২১ জন, সিরাজদিখানে ১৬ জন, শ্রীনগরে ১০ জন, টঙ্গীবাড়ীতে ২২, লৌহজংয়ে ৮ জন ও গজারিয়ায় ৮ জন রয়েছেন।
@ SOMOYBNGLAR # কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য।