গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া যৌনপল্লীতে সর্বসাধারণের যাতায়াত নিষিদ্ধ করা হয়েছে। শুক্রবার বিকাল ৩টা থেকে এই নির্দেশ কার্যকর করা হয়।
ঘন-ঘিঞ্চি পরিবেশ, অল্প জায়গায় বেশি মানুষের উপস্থিতি, সেই সঙ্গে পল্লীর বাসিন্দাদের অসচেতনতায় প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস এখানে ভয়াবহ রূপ নেওয়ার আশঙ্কা দেখা দেওয়ায় এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন। এতে করে পল্লীর প্রায় ৫ হাজার বাসিন্দার রোজগার বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।
তবে এই সময় প্রতি যৌনকর্মীকে ১৫ দিনের জন্য ২০ কেজি করে চাল বিতরণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আগামী দু-একদিনের মধ্যে তা বিতরণ করা হবে। এছাড়া বন্ধকালীন বাড়িওয়ালাদেরকে ভাড়াটিয়াদের কাছ থেকে বাড়িভাড়া না নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি আশিকুর রহমান।
শুক্রবার দুপুরে দেখা যায়, করোনা সংক্রমণের হার দিন দিন বেড়ে চলায় দৌলতদিয়া যৌনপল্লীতে মানুষের আসা-যাওয়া স্বাভাবিকের তুলনায় কিছুটা কমেছে। এখানকার বাসিন্দাদের মধ্যে তেমন কোনো সচেতনতা লক্ষ্য করা যায়নি। এমন পরিস্থিতির মধ্যেও প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ পল্লীতে যাতায়াত করছে।
এ সময় কয়েকজন যৌনকর্মী বলেন, আমরা পেটের দায়ে এখানে আছি। প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে মানুষ আসা-যাওয়া করে। কে অসুস্থ আর কে সুস্থ এটা বোঝাতো আমাদের পক্ষে সম্ভব না। তাই আমাদের কাছে যে আসে তাকেই তো ঘরে নিতে হয়। বর্তমানে করোনাভাইরাস আতঙ্কে এখানে লোকজনের সমাগম কমে গেছে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আবদুল জলিল ফকীর বলেন, দৌলতদিয়া যৌনপল্লীর ৬টি প্রবেশপথের মধ্যে ৫টি পথ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। জরুরি প্রয়োজনে বের হওয়ার জন্য শুধু একটি পথ খোলা রাখা হয়েছে।
তিনি জানান, বন্ধকালীন এখানকার বাসিন্দাদেরকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহযোগিতার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। বাসিন্দাদের সহযোগিতা না করা হলে এখানে মানবিক বিপর্যয় দেখা দিতে পারে।
যৌনকর্মীদের নিয়ে কাজ করা বেসরকারি উন্নয়ন সংগঠন মুক্তি মহিলা সমিতির প্রকল্প কর্মকর্তা আতাউর রহমান খান মঞ্জু বলেন, যেভাবে বিশ্বে করোনাভাইরাসের মতো মরণব্যাধি ছড়িয়ে পড়ছে তাতে করে দৌলতদিয়া যৌনপল্লী সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় ছিল। অবস্থার বিবেচনায় বন্ধের সিদ্ধান্ত ঠিক আছে।
তবে এখানকার শত শত বাসিন্দা আছে, যারা প্রতিদিন রোজগার করে প্রতিদিন খায়। তাদের জন্য খাবারের ব্যবস্থা না করা গেলে তাদের বেঁচে থাকা কঠিন হয়ে যাবে। এ বিষয়ে জরুরী ভিত্তিতে ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন।
গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি আশিকুর রহমান জানান, আগামী ৫ এপ্রিল পর্যন্ত দৌলতদিয়া যৌনপল্লীতে সর্বসাধারণের যাতায়াত বন্ধ করা হয়েছে। এ পল্লীতে তালিকাভুক্ত ১ হাজার ৬শ জন যৌনকর্মী বসবাস করে।
@ SOMOYBNGLAR # কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য।