যৌথ ব্যবসার কথা বলে চার্লস রূপম সরকারের কাছ থেকে ৬০ হাজার টাকা নিয়েছিলেন হেলাল উদ্দিন। কথা ছিল লভ্যাংশের একটি অংশ রূপমকে দেওয়া হবে। কিন্তু একপর্যায়ে হেলাল লভ্যাংশ দূূূরের কথা, বিনিয়োগকৃত ৬০ হাজার টাকার কথাও অস্বীকার করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে হেলালকে হত্যার পরিকল্পনা করেন রূপম। এর পর ফটোস্ট্যাট মেশিন বিক্রি করবেন বলে হেলালকে নিজের বাসায় ডাকেন রূপম।
বাসায় এলে পরিকল্পনা অনুযায়ী হেলালকে ঘুমের ট্যাবলেট মেশানো চা পান করতে দেওয়া হয়। হেলাল চা খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। তখন রূপম ও তার স্ত্রী শাহিনা আক্তার মনি মিলে টিভির ডিশ লাইনের তার দিয়ে ঘুমন্ত হেলালের গলায় ফাঁস দিয়ে হত্যা করেন। এর পর লাশ টেনে বাসার টয়লেটে নিয়ে যান। সেখানে রূপম তার স্ত্রী মনি ও শাশুড়ি রাশিদা আক্তারকে নিয়ে বঁটি দা ও চাকু দিয়ে হেলালের লাশ তিন টুকরা করেন। পরে টুকরা তিনটি বস্তা ও ব্যাগে পুরে ভাড়া করা অটোরিকশার মাধ্যমে বিভিন্ন জায়গায় ফেলে দেন। ডিবি উত্তর বিভাগের বিমানবন্দর জোনাল টিমের এডিসি কায়সার রিজভী কোরায়েশী আমাদের সময়কে সংশ্লিষ্টদের বরাত দিয়ে এসব তথ্য জানান।
গত সোম ও মঙ্গলবার রাজধানীর দক্ষিণখান ও বিমানবন্দর থানা এলাকা থেকে হেলাল উদ্দিনের খ-িত লাশ উদ্ধার এবং দুই নারীকে গ্রেপ্তারের পর এসব তথ্য বেরিয়ে এসেছে। গত বৃহস্পতিবার উত্তরা ও দক্ষিণখান থেকে হেলালের ব্যবসায়িক অংশীদার চার্লস রূপম সরকারের স্ত্রী শাহিনা আক্তার মনি ও শাশুড়ি রাশিদা আক্তারকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। গতকাল শুক্রবার তারা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে নৃশংস এ হত্যাকা-ের দায় স্বীকার করেন। মূল হোতা রূপম এখনো পলাতক। ডিবি কর্মকর্তারা জানান, দক্ষিণখানের মুক্তিযোদ্ধা মার্কেটে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের ব্যবসা করতেন হেলাল। গত সোমবার (১৪ জুন) দুপুর থেকে তিনি নিখোঁজ ছিলেন। পরের দিন দক্ষিণখানের মুক্তিযোদ্ধা সড়ক ও হাজী আবদুস সালাম সড়কের সংযোগ মোড়ে বস্তার ভেতর তার কোমর থেকে নিচের অংশ উদ্ধার করে পুলিশ। একই দিন দুপুরে বিমানবন্দর থানার ঈরশাল কলোনির পানির পাম্পের পাশে পাওয়া যায় গলা থেকে নাভী পর্যন্ত অংশ। গত মঙ্গলবার দক্ষিণখান এলাকার একটি ড্রেনের পাশ থেকে তার খ-িত মস্তক উদ্ধার করে ডিবি পুলিশ। একটি লাশের তিনটি অংশ তিন জায়গা থেকে উদ্ধারের পর তদন্ত শুরু করে ডিবির উত্তর বিভাগ। প্রথমে ওই ব্যবসায়ীর পরিচয় পাওয়া যায়নি। পরে আঙুলের ছাপের মাধ্যমে জাতীয় পরিচয়পত্র বের করে পরিচয় শনাক্ত করা হয়। পরে নিহতের বড় ভাই মো. হোজায়ফা দক্ষিণখান থানায় অজ্ঞাতপরিচয় আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা করেন। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উত্তর বিভাগের ডিসি মশিউর রহমান জানান, মনি ও রাশিদা আদালতে হেলালকে হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন। তারা পুরো ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন। মূল হোতা রূপমকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
@ SOMOYBNGLAR # কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য।