এমন নির্মম হত্যাকাণ্ডে শিশুর বাবা-মা পাড়া-প্রতিবেশীর আহাজারিতে বাতাস ভারি হয়ে উঠছে। এলাকায় চরম থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।বুধবার (১ জুলাই) বিলাসছড়া এলাকায় সরেজমিনে গেলে পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, একই এলাকার চা শ্রমিক মো. ইউনুস কয়েক মাস আগে শিবু গড়ের সিএনজি আটোরিকশার ব্যাটারি চুরি করে নিয়ে যায়। এ নিয়ে স্থানীয় লোকজন সালিস বৈঠকে ইউনুসকে দোষী সাব্যস্ত করে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করেন। কিন্তু সে (ইউনুস) এ টাকা দিতে অস্বীকার করে। এ ব্যাপারে সম্প্রতি শিশুর বাবা (শিবু গড়) টাকা না দিলে তাকে থানায় মামলার ভয় দেখায়। এতে সে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। মঙ্গলবার দুপুরে শিবুর শিশুপুত্র রিমন গড় পাশের বাড়ি থেকে দুধ আনতে গেলে ইউনুসের সাথে তার দেখা হয়। এ সময় রিমনকে ময়না পাখির বাচ্চা দেয়ার কথা বলে চা-বাগানের ৪নং সেকশনে নিয়ে যায়। এরপর থেকে রিমনকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিলো না। এদিন সন্ধ্যায় চা-বাগানের ৪নং সেকশনের একটি জঙ্গল থেকে গলাকাটা অবস্থায় তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এদিকে শিশু রিমনের এমন হত্যাকাণ্ডে পুরো চা বাগানে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। বাবা মা পাড়া প্রতিবেশী কারো যেন আহাজারি থামছে না। এলাকার প্রত্যেকে ইউনুসকে দায়ী করে এর সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন। অপরদিকে ক্ষিপ্ত চা শ্রমিকরা সকাল দশটায় বিলাসছড়া চা-বাগানের গাঙ্গপাড় শ্রমিক বস্তিতে ইউনুসের বাড়িসহ দশটি বাড়িতে ভাংচুর ও আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেয়। ইউনুসের বাবা মো. হানিফ জানিয়েছেন, আকস্মিকভাবে সকাল দশটার দিকে উত্তেজিত বস্তির চা শ্রমিকরা এসে প্রথমে তার ছেলে ইউনুসের ঘরে আগুন দেয়। পড়ে তার ঘরসহ বেশ কয়েকটি ঘরে আগুন দেয় ও অতর্কিতভাবে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করে। তিনিসহ তার পরিবারের লোকজন ভয়ে পালিয়ে গিয়ে আত্মগোপন করেন। তিনি নিজেও ছেলের বিচার দাবি করেন। তিনি জানান, সে আমাকে ও আমার আরো দু ছেলেকে কয়েকদিন আগে হত্যার হুমকি দেয়। তিনি বলেন, আমি তো দোষ করিনি। গাঙ্গপাড়ের বস্তিতে ভাংচুর অগ্নিসংযোগে প্রায় দশ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। তিনি চরম নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন বলে জানিয়েছেন।
এদিকে চা বাগানের কর্মকর্তা এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি। তবে বিলাসছড়া চা বাগানের পঞ্চায়েত প্রধান হিরণ ব্যানার্জী সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে বিচার দাবি করছেন। অপরদিকে শ্রীমঙ্গল থানা সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আশরাফুজ্জামান জানান, প্রাথমিকভাবে ইউনুস শিশু রিমন হত্যাকাণ্ডের কথা পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে। তাকে মৌলভীবাজার আদালতে পাঠানো হয়েছে।
@ SOMOYBNGLAR # কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য।