মোঃ রুবেল ইসলাম তাহমিদ মাওয়া -মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধিঃ
রাজধানীর বুড়িগঙ্গা নদীতে যাত্রীবাহী লঞ্চডুবির ঘটনার ১২ ঘণ্টার পর উদ্ধার হওয়া সুমন বেপারী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। আগামীকাল বৃহস্পতিবার (০২ জুলাই) আবারও তাকে হাসপাতালে নেয়া হবে। এর আগে গতকাল মঙ্গলবার (৩০ জুন) রাত সাড়ে ৯টার দিকে মুন্সিগঞ্জের টঙ্গিবাড়ী উপজেলার আব্দুল্লাপুর গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। তাকে দেখতে উৎসুক মানুষের ভিড় জমে যায়। এরপর থেকে হাজারো মানুষের প্রশ্নে জর্জরিত সুমন বেপারী। মানুষের নানা প্রশ্নের জবাব দিতে দিতে অস্বস্তিতে পড়েন সুমন। বুধবার (০১ জুলাই) ভোর থেকে উৎসুক জনতার ভিড় লেগে আছে সুমনের বাড়িতে। এতে চরম অস্বস্তিতে পড়ে সুমনের পরিবার। উৎসুক জনতার ভিড় সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন তার পরিবারের সদস্যরা। হাজারো মানুষের নানা ধরনের প্রশ্ন এবং ভিড়ে বিকেলে অসুস্থ হয়ে পড়েন সুমন বেপারী। বুধবার সন্ধ্যায় সরেজমিনে সুমনের বাড়ি গিয়ে দেখা যায়, নিজের ঘরে খাটের ওপর শুয়ে আছেন সুমন বেপারী। একটু পরপরই জোরে জোরে শ্বাস নিচ্ছেন। মাথার মধ্যে নিজের হাত দিয়ে আঘাত করছেন মাঝে মধ্যে।কেমন আছেন জানতে চাইলে সুমন বেপারী বলেন, ‘আমি ভালো নেই। মানুষের নানা প্রশ্নের জবাব দিতে দিতে আমি ক্লান্ত। আমার অস্বস্তি লাগছে। অসুস্থবোধ করছি আমি।’ এদিকে, ছেলের এমন অবস্থা দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন সুমন বেপারীর বৃদ্ধা মা আমেনা বেগম (৭৫)। পাশে বসে বাইরের লোকজনকে ছেলের কাছে আসতে নিষেধ করেন তিনি। কিন্তু তার কথা কেউ শুনছেন না। সুমন বেপারীর ভাতিজা আরাফাত রায়হান সাকিব বলেন, চাচাকে মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে বাড়িতে আনা হয়। এরপর থেকেই বাড়িতে মানুষের ভিড় লেগে আছে। মানুষের ভিড় সামলাতে হিমশিম খাচ্ছি আমরা। মানুষের হাজারো প্রশ্নে জর্জরিত হয়ে আমার চাচা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। বিকেল থেকে কোনো কথা বলছেন না। বৃহস্পতিবার চাচাকে হাসপাতালে নিয়ে যাব। আরাফাত রায়হান সাকিব আরও বলেন, লঞ্চডুবির পর আমার চাচাকে খুঁজে না পেয়ে আমরা সবাই ভেবেছি তিনি মারা গেছেন। শতভাগ নিশ্চিত ধরে নিয়েছিলাম চাচার লাশ পাব। এমনকি আমার দাদার কবরের পাশে চাচার জন্য কবর খোঁড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিল কেউ কেউ। পরে একটি টিভির লাইভে দেখতে পারি আমার চাচা বেঁচে আছেন। পরে আমরা ওই টিভি অফিসের লোকজনের সঙ্গে যোগাযোগ করি। এরপর নিশ্চিত হই আমার চাচা বেঁচে আছেন। মিডফোর্ড হাসপাতাল থেকে মঙ্গলবার রাতে চাচাকে বাড়িতে নিয়ে আসি। তখন সুস্থ থাকলেও এখন অসুস্থ হয়ে পড়েছেন চাচা। সুমন বেপারী মুন্সিগঞ্জের টঙ্গিবাড়ী উপজেলার আব্দুল্লাহপুর গ্রামের মৃত ফজল বেপারীর ছেলে। ঢাকার সদরঘাটের বাদামতলী এলাকায় ফলের ব্যবসা করতেন তিনি। সোমবার (২৯ জুন) মুন্সিগঞ্জের মিরকাদিম কাঠপট্টি ঘাট থেকে ছেড়ে আসা মর্নিং বার্ড লঞ্চের যাত্রী ছিলেন তিনি। লঞ্চটি সদরঘাটের শ্যামপুর এলাকায় অর্ধশতাধিক যাত্রী নিয়ে ডুবে যায়।