সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে মেয়েবন্ধু সেজে মোহাম্মদ আরিফুল ইসলাম ওরফে ফয়সাল নামে এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ২২ লাখ ৬৮ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে তিন বিদেশি নাগরিক।
শুধু ফয়সালই নয়, ফেসবুকে বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করে উপহার দেওয়ার কথা বলে দীর্ঘদিন ধরে প্রতারণা করে আসছিলেন তিন বিদেশি নাগরিক। তবে শেষ রক্ষা হয়নি। এক ভুক্তভোগীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গত বুধবার দিনগত রাতে রাজধানীর ভাটারা থানা এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। গতকাল বৃহস্পতিবার (০২ জুলাই) দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান সিআইডির সংঘবদ্ধ অপরাধ বিভাগের প্রধান ডিআইজি শেখ মোহাম্মদ রেজাউল হায়দার। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন—নগাং তেগমো বার্টিন (৪৭), ননাং তভোসার্গ ক্রিস্টিয়ান (৩৮) ও একোঙ্গো আর্নস্ট ইবরামিম (৪২)। তারা কোন দেশের নাগরিক, এখনও জানা যায়নি। পুলিশের ধারণা, তারা ক্যামেরুন এবং কেনিয়ার নাগরিক হতে পারে। সংবাদ ব্রিফিংয়ে ডিআইজি শেখ মোহাম্মদ রেজাউল হায়দার জানান, গ্রেপ্তারকৃতদের কারও কাছে পাসপোর্ট নেই এবং তারা তাদের জাতীয়তা সম্পর্কে এখনো তথ্য দেননি। তিনি বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে তারা বাংলাদেশে বসবাস করছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তারা বন্ধুত্ব তৈরি করে সেখান থেকে টার্গেট নির্দিষ্ট করে এবং টার্গেটের কাছ থেকে মূল্যবান উপহার দেওয়ার নামে অর্থ আদায় করেছে।’ তাদের অভিনব প্রতারণার কৌশল সম্পর্কে রেজাউল হায়দার বলেন, ‘গ্রেপ্তারকৃতরা “জেনিটারি” নামের একটা ফেসবুক আইডি ব্যবহার করে মেয়ে সেজে আরিফুল ইসলামের বন্ধু হয়। “জেনিটারি” নিজেকে আমেরিকান হিসেবে পরিচয় দেয় এবং ডিপ্লোম্যাটিক কুরিয়ার এজেন্টের মাধ্যমে আরিফুলের কাছে উপহার পাঠাতে চায় বলে জানায়।’ ‘পরে, ওই চক্রের একজন নিজেকে কুরিয়ার এজেন্ট পরিচয় দিয়ে আরিফুলকে ফোন দেয় এবং জানায় যে তার নামে কুরিয়ারে বেশ দামি কিছু উপহার এসেছে। কিন্তু, সে সব ছাড়াতে হলে টাকা দিতে হবে।’
সিআইডি কর্মকর্তা জানান, এভাবে কুরিয়ারে আমেরিকা থেকে আসা দামি উপহার ছাড়িয়ে দেওয়ার নাম করে চক্রটি ভুক্তভোগীর কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেয়। অতিরিক্ত ডিআইজি হায়দার বলেন, ‘দামি উপহারের লোভ দেখিয়ে চক্রটি আরিফুলের কাছ থেকে দুই দফায় প্রায় ২২ লাখ ৬৮ হাজার টাকা নিয়েছে।’ ‘এই চক্রের সঙ্গে স্থানীয় কিছু লোকের সম্পৃক্ততা আছে বলে আমরা জেনেছি। চক্রের বাকিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রেখেছি’, যোগ করেন তিনি।