চিত্রনায়ক সিয়াম আহমেদ। এখন পর্যন্ত মুক্তি পেয়েছে তার অভিনীত ৩টি চলচ্চিত্র। মুক্তির অপেক্ষায় আছে ৩টি (‘বিশ্বসুন্দরী’, ‘পাপ-পূণ্য’ ও ‘শান’)। কাজ করছেন ‘ইত্তেফাক’, ‘এডভেঞ্চার অব সুন্দরবন’ ও ‘অপারেশন সুন্দরবন’ ছবির। সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয় ও চলচ্চিত্র নিয়ে তিনি মুখোমুখি হয়েছেন আমাদের সময়ের।
সময় কাটছে কীভাবে?
করোনা থেকে নিজেকে এবং পরিবারকে বাঁচাতে এখনো বাসায় আছি। পরিবারকে সময় দিচ্ছি। বিভিন্ন মুভি দেখছি, ফোনে ফোনে সবার সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। আলহামদুলিল্লাহ এখন পর্যন্ত ভালোই আছি।
কোনো তুচ্ছ বিষয়কেও অবহেলা করা যাবে না। আর যে কোনো পরিস্থিতির সঙ্গে লড়াই করে বাঁচতে হবে।
করোনা-পরবর্তী পৃথিবী কী রকম হওয়া উচিত বলে মনে করেন?
এখন একজন আরেকজনের যেভাবে খবর নিচ্ছেন, খেয়াল রাখছেন, পাশে থাকছেন- এ রকম যেন সব সময় থাকে। করোনা-পরবর্তী সময়ে এই জিনিসটা যেন হারিয়ে না যায়।
পরিচালক এবং প্রযোজক সিদ্ধান্ত নেবেন, তারা কখন কাজে ফিরতে পারবেন। তখন আমিও হয়তো কাজে ফিরতে পারব। এর আগে কিছু বলা সম্ভব নয়। এর মধ্যে দুটি ছবি নিয়ে কথা হয়েছে। তারা কাজ শুরু করতে চাচ্ছেন। বাকি ছবিগুলো নিয়েও কথা হবে। দেখা যাক কী হয়!
দীর্ঘদিন সিনেমা হল বন্ধ। সামনে কোরবানির ঈদ। অনেকে সিনেমা হল খুলে দেওয়ার কথা বলছেন, অনেকে না করছেন। আপনার মতামত কী?
সিনেমা হল যদি খুলেও দেওয়া হয়, দর্শক কী স্বাস্থ্যঝুঁকি নিয়ে আসবে? হ্যাঁ, মানুষ ঘরের বাইরে যাচ্ছে জীবিকার প্রয়োজনে, বিনোদনের জন্য নয়। বিনোদনের জন্য কোথাও গেলে সবার আগে চিন্তা করে নিজের সুরক্ষার কথা। আমার মনে হয়, এই মুহূর্তে সিনেমা হলে আমরা দর্শক আনতে পারব না। আর কিছুদিন অপেক্ষা করাটাই উত্তম। এই ঈদেও আমরা নতুন ছবি মুক্তি দিতে পারব না, দিলেও দর্শক হয়তো সেভাবে আসবে না।
অনেকেই নতুন ছবি অনলাইন প্লাটফর্মে মুক্তির কথা বলছেন…
অনলাইনে মুক্তি দিয়ে যদি চলচ্চিত্রের বাজেট উঠিয়ে আনা যায়, তা হলে মুক্তি দেওয়া যেতেই পারে। কিন্তু আমাদের দেশে অনলাইন প্লাটফর্মগুলো এখনো এতটা শক্ত অবস্থানে যায়নি। দেখুন, আমার একটা ছবিতে প্রমোশনসহ খরচ হয়ে যায় প্রায় আড়াই কোটি টাকা। অনলাইনে যদি ত্রিশ-চল্লিশ লাখ টাকায় ছবিটি বিক্রি হয়, তা হলে বিশাল একটা ক্ষতির মুখে পড়বেন প্রযোজক। যিনি অর্থলগ্নি করেছেন, তিনি তো লাভের আশায় করেছেন। এখন তিনি যদি ক্ষতির মুখে পড়েন, তবে কি আর ছবি বানাতে চাইবেন? একটা চলচ্চিত্রের সঙ্গে অনেকগুলো মানুষ জড়িত। ছবিটা বিক্রির পর অনেকের পারিশ্রমিক পরিশোধ হয়। আবার শাকিব ভাইয়ের, শুভ ভাইয়ের, আমার এমন কিছু ছবি মুক্তির অপেক্ষায় আছেÑ যেগুলো আসলে বড়পর্দায় না দেখলে দর্শক মজা পাবে না। আর চলচ্চিত্র তো বড়পর্দার জন্যই নির্মিত হয়।
অনেক চলচ্চিত্র বিশ্লেষকের মতে, আপনার হাত ধরেই এগিয়ে যাবে আমাদের ইন্ডাস্ট্রি। আপনি কী মনে করেন?
যদি কেউ মনে করেন, তাদের অনেক ধন্যবাদ। আমার কাছে কাজ করতে ভালো লাগে, তাই কাজ করে যাচ্ছি। কাজটাকে আমি ভীষণ ভালোবাসি। কাজটা সম্মানের সঙ্গে করে যেতে চাই।
দর্শকদের উদ্দেশে কিছু বলুন…
আমাদের ইন্ডাস্ট্রির অবস্থা যে কিছুদিন আগে ভালো ছিল, ব্যাপারটা এমন নয়। আবার করোনা পরিস্থিতির পরে আমরা একটা নতুন অধ্যায়ে প্রবেশ করতে যাচ্ছি। এমন পরিস্থিতিতে দর্শকদের সাপোর্ট ভীষণ প্রয়োজন। অনেক কিছু পরিবর্তন হচ্ছে। অনেকে অনলাইননির্ভর হয়ে যাচ্ছে কিংবা যাবে। এ ক্ষেত্রে হয়তো আমাদের ছবির গল্প, ম্যাকিং পরিবর্তন হবে। হওয়াটাই স্বাভাবিক। কারণ তখন অডিয়েন্সের লেভেলও চেঞ্জ হয়ে যাবে। যেহেতু সবকিছু নতুন করে আবার শুরু হচ্ছে, তাই আমরা ভালো কোনো একটা দিকে যেতেও পারি। আমরা যদি দেশের সবার কাছে পৌঁছাতে না পারি, তা হলে দেশের বাইরের মানুষের কাছে পৌঁছে লাভ কী? আশা করি, দর্শক আমাদের পাশে থাকবে। আর দর্শক পাশে থাকলে খুব শিগগিরই আমরা এই খারাপ সময় কাটিয়ে উঠতে পারব।
@ SOMOYBNGLAR # কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য।