সাইফুল ইসলাম মুকুল,রংপুর।
করোনার প্রভাবে মৌসুমের শুরু থেকেই বাজারে কম দাম ছিলো হাড়িভাঙ্গার। সরকার ঘোষিত লকডাউনের প্রভাবে হাড়িভাঙার বাজারদর নেমে এসেছে অর্ধেকে। আমচাষী বাগানমালিক বাজারে আম নিয়ে আসলেও হাটে ক্রেতা না থাকায় দুশ্চিন্তায় আমচাষীরা।
বৃহস্পতিবার সর্বাত্মক লকডাউনের প্রথমদিনে হাড়িভাঙ্গার রাজধানী খ্যাত পদাগঞ্জহাটে বাজারঘুরে দেখা যায়,বাজারে কয়েকদিনের মত ভীড় নেই ।স্থানীয় ব্যবসায়ী ছাড়া অন্যান্য জেলা থেকে ব্যবসায়ীরা না আসায় তেমন বিক্রিও হচ্ছেনা।গত মৌসুমে প্রতিমণ পাকা আম ১৬০০-১৮০০ টাকায় বিক্রি হলেও আজ ৬০০-৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ১৮০০-৩০০০ টাকা দরের কাঁচা আম বিক্রি হচ্ছে ১০০০-১৪০০ টাকায়।এ মৌসুমে আমের দাম নেমে এসেছে গত বছরের তুলনায় অর্ধেক বা তারও কম।
আম চাষীরা বলছে,বাজারে আসার পর একমাসের মধ্যে হাড়িভাঙ্গার আমের মৌসুম প্রায় শেষই হয়ে যায়।কিন্ত লকডাউনে মৌসুম শেষ হয়ে যাওয়ার শঙ্কায় হতাশায় ভুগছে আমচাষী বাগানমালিকরা।লকডাউনে দেশের বিভিন্ন জেলার ব্যবসায়ীরা বাজারে আসতে না পারা ও পরিবহণ সমস্যার কারণেই হাড়িভাঙ্গা আমের এমন বাজার ধ্বস বলে দাবি আমচাষীদের।লকডাউনে ক্রেতাদের হাতে আম পৌঁছানো যাচ্ছেনা বলে ব্যবসায়ীরা বাজারে আম কিনতে আসছে না। পদাগঞ্জ এলাকার আমচাষী আব্দুর রহমান জানান, আমি শুধু আমচাষ করি এবার যদি আমের দাম না পাই তাহলে আমার পরিবার বাঁচবে না।হাটে আম বিক্রি করতে না পারলে কিভাবে চলব,কি করি খাব।
আরেক চাষী আশরাফুল জানান,আমরা আম নিয়ে হাটে এসে বসে আছি কিন্ত আম কেনার লোক নাই।লকডাউনে ব্যবসায়ীরাও আম কেনার সাহস পাচ্ছেনা। আম পরিবহনের ট্রাক,পিক-আপগুলো দেশের বিভিন্ন জেলায় আম সরবরাহ করতে আম নিয়ে যাবার সময় সমস্যা না হলেও ফাঁকা গাড়ী নিয়ে ফিরে আসার সময় ব্যাপক ভোগান্তির শিকার হচ্ছে বলে অভিযোগ ব্যবসায়ীদের। লকডাউনে পণ্যবাহী ট্রাক চলাচলে বিধিনিষেধের আওতামুক্ত থাকলেও বাজারজাতকরন নিয়ে দুশ্চিন্তায় ব্যবসায়ীরা। মাহাবুল নামের এক ব্যবসায়ী জানান,এমনিতে লকডাউনে আমরা আম কেনার সাহস পাচ্ছিনা তার উপর আমের গাড়ি ফেরত আসার সময় পুলিশ ওই ফাঁকা গাড়ী আর আসতে দিচ্ছেনা।রংপুর জেলা প্রশাসক আসিব আহসান জানান,আম পরিবহনের জন্য গাড়ীগুলোকে আটকানোর সুযোগ নেই।তবে এ ধরনের ঘটনা ঘটলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। স্বাদে,গন্ধে অতুলনীয় আশবিহীন এই আম এ বছর রংপুরের ১ হাজার ৮৫০ হেক্টর জমিতে চাষ করা হয়েছে। এর বেশির ভাগই (১হাজার ২৫০ হেক্টর) মিঠাপুকুর উপজেলায়। বদরগঞ্জে ৪০০ হেক্টরে চাষ হয়েছে। এ ছাড়া রংপুর মহানগর এলাকায় ২৫ হেক্টর, সদর উপজেলায় ৬০, কাউনিয়ায় ১০, গঙ্গাচড়ায় ৩৫, পীরগঞ্জে ৫০, পীরগাছায় ৫ ও তারাগঞ্জ উপজেলায় ১৫ হেক্টর জমিতে আমবাগান রয়েছে।
@ SOMOYBNGLAR # কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য।