পদ্মাসেতুর সড়ক পথের পিচ ঢালাইয়ের কাজ চলছে ।
লকডাউনে যেহেতু পন্যবাহি যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক ছিল তাই আমাদের মালামাল পরিবহনে সুবিধা হয়েছে। কোন প্রাকার ঝামেলা ছাড়াই নির্দিষ্ট সময়ের পূর্বেই মালামাল কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ডে চলে এসেছে। এতে কাজের অগ্রগতি বেড়েছে। গত ৩০ জুন পর্যন্ত পদ্মা সেতুর কাজের অগ্রগতি হয়েছে ৯৪ ভাগ এবং প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি হয়েছে ৮৭ ভাগ। সেতুর অবশিষ্ট কাজের মধ্যে রয়েছে রোডওয়ে স্ল্যাব বসানো, প্যারাপেট ওয়াল ও স্ট্রীট লাইটং বসানোর কাজ। প্রায় ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত পদ্মা সেতু আগামী জুন মাসে চালু হবার কথা রয়েছে। ডুবে যাওয়া জাহাজ থেকে মালামাল উদ্ধারের তৎপরতা এদিকে পদ্মা সেতুর রেল লাইনে রেলিংয়ের গালভানাইজ স্টীল ভর্তি করা মাওয়াগামী বার্জ হ্যাংগ্যাং-১ বঙ্গপোসাগরের সন্দ্বীপ উপকুলে ডুবে যাওয়া জাহাজ থেকে মালামাল উদ্ধাওে কৎপরতা শুরু হয়েছে। গত এঙ্গলবার সকালে জাহাজ সন্দ্বীপ উপকুলে ডুবে যায়। তবে ১৩ জন নাবিকের সবাই তীরে উঠতে সক্ষম হয়েছেন। পদ্মা মূল সেতুর ঠিকাদার চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং গ্রুপ কোম্পানী লিমিটেড (এমবিইসি) চীন থেকে এই গালভানাইজ স্টীল অবকাঠামোগুলো প্রকল্প এলাকা মাওয়ায় নিয়ে আসছিল। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, মঙ্গলবার ভোর ৩টায় চট্টগ্রাম বন্দর থেকে জাহাজটি রওনা হয়।
এটি ১৫ জুলাই মাওয়ায় পৌছার কথা ছিল। কিন্তু সকাল সাড়ে ৯টার দিকে সন্দ্বীপ থানাধীন এলাকায় (২২০৮.৬৯২ডিগ্রি এন এবং ৯১২৬.৮৯১ ডিগ্রি ই অ্যাপ্রেক্স) ডুবে যায়। এই কর্মকর্তা জানান, জাহাজটি ঝড়ের কবলে পড়ে এক পর্যায়ে একটি ইঞ্জিন বিকল হয়ে যায়। এরই মধ্যে সেখানে ডুবন্ত একটি জাহাজের সাথে ধাক্কা খেয়ে এর তলা ফেটে যায়। পরে আশপাশে থাকা মাছ ধরার ট্রলার এসে জাহাজের নাবিকদের উদ্ধার করে। এই নাবিকরা এখন সন্দ্বীপে রয়েছেন। এই কর্মকতা গালভানাইজ স্টীল অবকাঠামোগুলো উদ্ধার করে আরেকটি জাহাজে করে মাওয়ায় নিয়ে আসার প্রক্রিয়া চলছে বলে জানান। এর আগে স্টীল অবকাঠামোগুলো অন্যান্য মালামালের সাথে মাদার ভার্সেলে করে চীন থেকে চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরে আসে। পরবর্তী লাইটার জাহাজে করে এগুলো মাওয়ায় আনা হচ্ছিল। এই গালভানাইজ স্টীল অবকাঠামো ভর্তি একই কোম্পানীর আরেকটি বার্জ হ্যাংগ্যাং-২ মাওয়ায় পৌছেছে ১০ জুলাই। মাওয়া কুমারভোগ কন্সট্রাকশন ইয়ার্ডে জাহাজটি থেকে মালামাল খালাস করা হচ্ছে। ডুবে যাওয়া জাহাজটির ক্যাপ্টেন আসলাম শেখ সন্দ্বীপ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন। সর্ব শেষ খবরে জানা যায় জাহাজটি হতে মালামাল উদ্ধারে গতকাল চিটাগংথেকে একটি ভাসমান ক্রেন পাঠানো হয়েছে। মালামাল উদ্ধার কওে এগুলো মাওয়ায় নিয়ে আসা হবে। ঠিকাদার কোম্পানীর দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, জাহাজটি ডুবে যাওয়ায় পদ্মা সেতুর মালামালের মানের কোন ক্ষতি হবে না। গালভানাইজ স্টীল হওয়ার কারণে ক্ষতির কারণ নেই বলে জানান। তিনি বলেন, যেখানে জাহাজ ডুবে গেছে সেখানে পানি কম। ভাটায় হাজাটির কেবিন জেগে যায়। জোয়ারে আবার পুরোপুরি ডুবে যায়। পদ্মা সেতুর এক প্রকৌশলী জানান, সেতুর নিচতলায় রেলওয়ে স্ল্যাবের দুই পাশে রেলিং থাকবে। সে রেলিং প্ল্যাটফর্মের মালামালের একটি চালান চট্টগ্রাম থেকে লাইটারে করে মাওয়া আনার সময় ডুবে যায়। ঠিকাদারের আবেদনের প্রেক্ষিতে বঙ্গোপসাগরে থাকা সেই মালামালের প্রয়োজনীয় নিরাপত্তার জন্য সেতু প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক কোস্টগার্ড ও নৌপুলিশকে জরুরি পত্র প্রেরণ করা হয়েছে। তিনি জানান, পদ্মা সেতুর মালবাহী জাহাজ ডুবিতে সেতুর কাজে কোন রকম ব্যাঘাত হবে না। কারণ এই স্টিলের মালামাল খুব দ্রুতই উদ্ধার করে প্রকল্প এলাকায় নিয়ে আসা হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।