এস এম পলাশ, সময়বাংলার স্টাফ করেসপন্ডেন্ট।
সারা দেশে সর্বকালের চেয়ে বর্তমান সময়ে সবচেয়ে বেশি অপ-সাংবাদিকতা বেড়েছে।এর কারন, অনলাইন পোর্টাল, ফেজবুক টিভি, ইউটিউব চ্যানেল, আর তথাকথিত স্থানিয় দৈনিক।জীবনে কখনো এক কলম লিখেনি, কয়দিন আগেও ছিল মোটরসাইকেল চালক, টিভি মেকার, মহুরী, পত্রিকার হকার, অটো চালক, দালাল সহ নানান শ্রমজীবী পেশার সাথে। হঠাৎ করে কোনো অনলাইন পত্রিকা, স্থানীয় দৈনিক বা ফেজবুকে টিভি নাম দিয়ে একটা আইডি খুলে নামের আগে মস্তবড় সাংবাদিক পদবি জুড়ে দিয়েছে।এতে যুক্ত হচ্ছে দুষ্ট শ্রেনীর লোকজন, যাদের কোনো রকম যোগ্যতা নেই তারাই আসছে এই মহান পেশাকে বিতর্কিত করতে।
দিনে দিনে ১০ দিন ফেজবুকে লিখে কিম্বা অখ্যাত কোন আন্ডারগ্রাউন্ড পত্রিকার কার্ড নিয়ে এসে গেছেন সাংবাদিক নেতা বনেও।এদের উদ্দেশ্য একটাই ধান্দা করা, রাত পোহালেই দল বেধে নেমে পরে ধান্দাবাজীতে। বিভিন্ন সরকারি দপ্তর, থানা পুলিশ, জনপ্রতিনিধি আর সহজ সরল গরিব মানুষ এদের টার্গেট।দালালী, চাটুকারীতা আর তেলমাখাতে এরা পটু।বাল্যবিয়ে, সরকারি চাল বিতরণ সহ নানান স্থানে হানা দেয় এরা। গরিব অসহায় মানুষকে জিম্মি করে, ভয়ভীতি দেখিয়ে ২ শ, ৪ শ টাকা নিয়ে আসে।বিভিন্ন চেয়ারম্যান এর দপ্তরে গিয়ে এরা নিয়ে আসে মাসিক বখরা। মুলধারার মিডিয়ায় সাথে এদের কোন প্রকার সংযোগ না থাকলেও দাপরে বেড়াচ্ছে সব যায়গায়।অনেকে আছে শুধু একটা আইডি কার্ড তাদের সম্বল, আর সাংবাদিক খাতায় নাম লিখিয়ে নেমে পরে চাঁদাবাজি, দালালী, মাদক বিক্রি সহ নানান অপকর্মে।এদের কখনো কোথাও সংবাদ প্রকাশ করতে দেখা যায়না, মাঝেমধ্যে নিজ ফেইসবুক আইডিতে অন্যকে ব্যক্তিগত আক্রমণ থেকে দুই লাইন লিখলেও তার মধ্যে সব বানান ভুল থাকে।অপরদিকে আর এক শ্রেণির সাংবাদিক হওয়ার কারন খুজে দেখা গেছে, কেউ সরকারি যায়গায় অবৈধ দোকান টিকিয়ে রাখতে সাংবাদিক হয়েছে, কেউ যায়গা জমি নিয়ে বিরোধ থাকায় সাংবাদিক হয়েছে। কেউ মাদক বাণিজ্য করতে, কেউ আবার প্রতিপক্ষে ঘায়েল করতে, কেউ নিজের কোন যোগ্যতা না থাকায় টাকা ইনকামের জন্য এই পেশায় প্রবেশ করেছে।আর এই কারনে বর্তমানে তৃণমূল গণমাধ্যমে চরম বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছে। কোনঠাসা হয়ে পরেছে মৌলিক পেশাদার সাংবাদিক মহল। এদের কারনে মুলধারার অনেক সাংবাদিক এখন নিজেকে গুছিয়ে নিয়েছে।গ্রাম গঞ্জে পাড়া মহল্লায় এই সাংবাদিকদের অত্যাচরে অতিষ্ঠ সাধারণ মানুষ।এরা প্রশাসন, পুলিশ সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতার সাথে সেলফি তুলে নিজে বড় সাংবাদিক জাহির করতে চায় এবং ফেজবুকে নামে আগে জার্নালিস্ট, সাংবাদিক জুড়ে দেয়।একাধিক চেয়ারম্যান জানায়, কুরবানির ঈদকে কেন্দ্র করে এরা দল বেধে আসছে, এবং ঈদের বকশিস দাবী করেছে। কিন্তু এরা কোথার সাংবাদিক, কোথায় তাদের সংবাদ প্রকাশ করা হয় তা জানা নেই।এক প্রবীণ শিক্ষক জানায়, আমরা আগে দেখেছি সাংবাদিকতা পেশায় সমাজের জ্ঞানী গুনী ও দেশ প্রেমিক লোক কাজ করত, কিন্তু এখন দেখছি এই পেশাকে পুজি করে অাততায়ীর ভুমিকা পালন করছে এক শ্রমিক টাউট বাটপার। এতে দেশের প্রতিভাবান সাংবাদিকরা হারিয়ে যাচ্ছে।সরকারের একজন প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তা জানান, গণমাধ্যমের সুনির্দিষ্ট কেনো নীতিমালা না থাকায় প্রশাসন ব্যবস্থা নিতে পারছে না, তাই যতোদিন নীতিমালা তৈরি না হয়, ততোদিন জনগণকে সচেতন হতে হবে এবং সকল অপ-সাংবাদিকতা বয়কট করতে হবে।লৌহজংয়ে দেখাগেছে মাদক ব্যাবসায়ী, হোন্ডা চালক, টিভি মেকানিক, ঔষধ কোম্পানির প্রতিনিধি, পত্রিকার হকার, মলম বিক্রেতা, ছাত্র নেতা সহ নানাররকম দুষ্ট লোক সাংবাদিক পরিচয়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে।সাংবাদিকতায় প্রবেশ করতে শিক্ষাগত যোগ্যতার চেয়ে অভিজ্ঞতার মূল্যায়ন বেশি। তাই এই পেশায় একজন রিকশা চালক ঢুকলে কোন সমস্যা নেই, যদি তার প্রতিভা থাকে। কিন্তু কেউ যখন এই মহান পেশা পুঁজি করে দূর্বৃত্তায়ন করে তখনই বিতর্ক ছড়ায়।
@ SOMOYBNGLAR # কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য।