মোঃ রুবেল ইসলাম তাহমিদ,মাওয়া মুন্সীগঞ্জ।
মুন্সীগঞ্জের মাওয়া প্রান্ত দিয়ে সকাল সাড়ে ৭টার দিকে প্রধানমন্ত্রী গাড়ি নিয়ে সেতুতে ওঠেন। সেতুর সাত নম্বর পিলার থেকে ১৮ নম্বর পিলার পর্যন্ত প্রায় ২ কিলোমিটার হেঁটে হেঁটে পদ্মাসেতু পরিদর্শন করেন সরকার প্রধান শেখ হাসিনা। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন বোন শেখ রেহানা। শুক্রবার (৩১ ডিসেম্বর) প্রধানমন্ত্রী গাড়ি নিয়ে পদ্মা সেতুতে ওঠার পর গাড়ি থেকে নেমে সেতুর ৭ নম্বর পিলার থেকে ১৮ নম্বর পিলার পর্যন্ত ১৬৫০ মিটার পথ হাঁটেন। এরপর আবার গাড়িতে উঠেন।
সাড়ে ৮টার দিকে সেতুর জাজিরা প্রান্ত দিয়ে নামেন। জাজিরা প্রান্তে সেতুর সার্ভিস এরিয়ায় দু” বোন সকালের নাস্তা করেন।পরে আবার সেতু পার হয়ে ফিরে আসেন সড়ক পথে। এর আগে গত ২৪ জানুয়ারি গোপালগঞ্জের টুঙ্গীপাড়া থেকে ঢাকায় ফেরার পথে বারবার তাকিয়ে স্বপ্নের পদ্মা সেতু দেখছিলেন প্রধানমন্ত্রী। ওই সময় বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা হেলিকপ্টার থেকেই বেশ কিছু ভিডিও মোবাইল ক্যামেরায় ধারণ করেন। প্রধানমন্ত্রীর মোবাইলে ধারণ করা সেই ভিডিও শেয়ার করেন উপ প্রেস সচিব আশরাফুল আলম খোকন। ভিডিও শেয়ার করে তিনি লিখেন, স্বপ্নের পদ্মা ব্রিজ আজ বাস্তবে রূপ নিচ্ছে। গভীর মমতায় পদ্মা ব্রিজ নির্মাণের অগ্রগতি দেখছেন এই স্বপ্নের স্বপ্নদ্রষ্টা ও বাস্তবায়নের কারিগর আমাদের পরম শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অল্প সময়ে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে ছড়িয়ে পড়া সে ভিডিওতে দেখা যায়, প্রধানমন্ত্রী নিজে হেলিকপ্টারের জানালা দিয়ে মোবাইলে ভিডিও ধারণ ও ছবি তোলেছেন। এ সময় তাকে বেশ হাস্যোজ্জ্বল দেখা গেছে। এদিকে, দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অংশের সাথে উত্তর-পূর্ব অংশের সংযোগ ঘটাবে এ পদ্মা সেতু। উন্নয়নশীল দেশের জন্য পদ্মা সেতু হতে যাচ্ছে ইতিহাসের একটি সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জিং নির্মাণ প্রকল্প। দুই স্তর বিশিষ্ট স্টিল ও কংক্রিট নির্মিত ট্রাস ব্রিজটির ওপরের স্তরে থাকবে চার লেনের সড়কপথ এবং নিচের স্তরটিতে থাকবে একটি একক রেলপথ। পদ্মা সেতু নির্মাণকারী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি। সেতুটি চালু হলে দক্ষিণাঞ্চলের ২১টি জেলার সঙ্গে ঢাকাসহ সারা দেশের যোগাযোগ সহজ হবে। পদ্মা সেতু নির্মাণে সম্ভাব্যতা যাচাই সম্পন্ন হয় ২০০৫ সালে। প্রকল্প নেয়া হয় ২০০৭ সালে। ব্যয় ধরা হয়েছিল ১০ হাজার ১৬২ কোটি টাকা। কিন্তু নানা জটিলতায় সাত বছর পর মূল সেতুর কাজ শুরু হয় ২০১৪ সালে। এখন পর্যন্ত ব্যয় দাঁড়িয়েছে ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি টাকা। সময়মতো কাজ না হওয়ার পেছনে পদ্মা নদীর অননুমেয় রূপ, বন্যায় ভাঙন, করোনা পরিস্থিতিকে দায়ী করা হয়। গত বছরের ডিসেম্বরে সেতুর সর্বশেষ স্টিলের কাঠামো বা স্প্যান বসানোর পর মূলত কারিগরিভাবে জটিল কাজ শেষ হয়। যুক্ত হয় মুন্সীগঞ্জের মাওয়া এবং শরীয়তপুরের জাজিরা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৫ সালের ১২ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিক সেতুর নির্মাণ কাজ উদ্বোধন করেন। ২০১৮ সালে ১৪ অক্টোবর সেতুর রেল সংযোগ উদ্বোধন এবং সেতু পরিদর্শন করেন। এ ছাড়াও হেলিকপ্টারে করে সেতু প্রত্যক্ষ করেন বেশ কয়েকবার। ২০২২ সালের জুনে পদ্মা সেতু খুলে দেয়ার টার্গেট নিয়েই চলছে শেষ পর্যায়ের কাজ। প্রথম থেকেই নানা প্রতিক‚লতা কাটিয়ে এখন শুধু স্বপ্নধরার হাতছানি। জুনে খুলবে পদ্মা সেতু। সে লক্ষে চীনের দুই প্রতিষ্ঠান দ্রুতগতিতে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে টার্গেটের মধ্যেই পদ্মা সেতু উদ্বোধন করা হবে। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ সেতুর দুইপার্শ্বে জড়ো হচ্ছেন সেতু দেখতে। একই সাথে সেতু উদ্বোধন দেখার জন্য বিষেশ করে মুখিয়ে রয়েছেন দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে কোটি কোটি মানুষ।
@ SOMOYBNGLAR # কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য।