পাবনা প্রতিনিধি ॥
পাবনা শহরের মডেল হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এক গৃহবধূকে সিজারিয়ানের পর নবজাতক উধাও বিষয়ে নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে প্রসূতি স্ত্রী রোগ চিকিৎসক ও সার্জন ডা ঃ শাহিন ফেরদৌস শানু মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারী) দুপুরে পাবনা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ডাক্তার শাহিন ফেরদৌস শানু। এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন এনেসথেশিয়া চিকিৎসক আরিফুর ইসলাম, মডেল হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের পরিচালক সেলিম উদ্দিন ও রোগীর স্বামী নজরুল ইসলাম। লিখিত বক্তব্যে ডাক্তার শাহিন ফেরদৌস শানু বলেন, ক্লিনিক থেকে আমাকে জানানো হয় আমার রোগী দাবী করে একজন এসেছে জরুরীভাবে সিজারিয়ান অপারেশন করতে হবে।
আমি এসে দেখি রোগীকে অপারেশন থিয়েটারে নেয়া হয়েছে। আমার কোন প্রেসক্রিপশন বা কোন কাগজপত্র নেই। এই অবস্থায় ডাক্তার হিসেবে রোগীর অবস্থা জরুরী দেখে তাকে সিজারিয়ান অপারেশন করি। পেটের চামড়া কাটার পর বুঝতে পারি এই রোগীর পেটে কোন বাচ্চা নেই। তাৎক্ষণিকভাবে রোগীর স্বামী নজরুল ইসলামকে ডেকে নিয়ে তাকে সরাসরি দেখানো হয়। তিনি আরও বলেন, মেডিকেলের ভাষায় এটা ফ্যানটম প্রেগনেন্সি বা ভৌতিক গর্ভধারণ। এমন রোগী খুব কম পাওয়া যায়। তাছাড়া রোগীর সাথে যে ফাইল ছিল সেগুলো ২০১৭ সালের রোগীর প্রথম বাচ্চার কাগজপত্র। জরুরী সময়ে তারিখ দেখা হয়নি। দেখা হয়েছিল রিপোর্টের রেজাল্ট। এই বিষয়টি রোগী ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দায়সারা দায়িত্ব ও কর্তব্যের কারনে হয়েছে। এটা নিতান্তই জরুরীর কারনে এমনটি হয়েছে বলে তিনি সাংবাদিকদের কাছে ভুল স্বীকার করেন। তবে এই ঘটনার প্রেক্ষিতে বাচ্চা উধাও বা চুরি হয়েছে এমন খবর নানা গণমাধ্যমে আসলেও এ তথ্য সঠিক নয়। বিষয়টি নিয়ে আমি বিব্রত ও লজ্জিত। ক্লিনিক মালিক সেলিম উদ্দিন বলেন, ডাক্তার শাহিন ফেরদৌস শানুর নাম বলায় রোগীকে আমরা তেমন কোন প্রশ্ন করি নাই। কাগজ দেখতে চাইলে তারা বলেন ভুল করে কাগজ পত্র বাড়িতে রেখে এসেসে। সাথে কিছু পুরাতন কাগজ ছিল। এর পরে রোগীর একটি পরিক্ষা করানো হয়েছে। তবে পুরোপুরি পরীক্ষা নীরিক্ষা না করে রোগী ভর্তি করা হয়েছে বলে এ দায় স্বীকার করেন ক্লিনিক মালিক। রোগী আকলিমা খাতুন আঁখির স্বামী নজরুল ইসলাম বলেন, আমি সব কাগজ পত্র জমা দিয়েছিলাম। সেগুলো ক্লিনিক কর্তৃপক্ষা গায়েব করে দিয়েছে। এদিকে এ ঘটনায় জেলা প্রশাসন কার্যালয় ও সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে পৃথক দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। পাবনা জেলা প্রশাসক বিশ্বাস রাসেল হোসেন বলেন, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক সাইফুর রহমানকে প্রধান করে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য বলা হয়েছে। পাবনার সিভিল সার্জন ডা ঃ মনিসর চৌধুরী বলেন, বাচ্চা উধাওয়ের বিষয়ে সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে মঙ্গলবার পাবনা মেডিকেল কলেজের (গাইনী ও অবস বিভাগ) সহকারী অধ্যাপক ডা. নার্গিস সুলাতানকে প্রধান করে ৩ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
@ SOMOYBNGLAR # কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য।