সুইটি আক্তার, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | সময় বাংলার | মাদারীপুর।
মাদারীপুরে রমজান মাস শুরুতেই বাজারের জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাওয়া নিয়ে চিন্তায় পড়েছে। ইজিবাইক, অটোরিকশা,ভ্যান চালকসহ কৃষি জমিতে খেটে খাওয়া দিনমজুর মধ্যবিত্ত পরিবার। কাঁচা সবজি ও মাছ মাংসের দাম বেড়ে- গত দুই তিনদিনের ব্যবধানে বাজারে কাঁচা সবজির দাম কেজিতে ১০-৩০ টাকা বেড়েছে। মাছ ও মাংসের দাম বেড়েছে ২০০-৩০০- টাকা। বাজারের ক্ষুদ্র বিক্রেতারা বলেন, দুইতিনদিন ধরে বাজারে কাঁচামাল আগের তুলনায় কম, ক্রেতাদের চাহিদা বেশি। তা-ই বেশি দামে বিক্রি করতে হয়। (২৩-মার্চ বৃহস্পতিবার) সকালে মাদারীপুর পৌর শহরের প্রধান শিল্পনগরীর পুরানবাজার সরজমিনে গিয়ে দেখে যায়। গত সপ্তাহে যেখানে প্রতি কেজি বেগুন ছিলো ৪০ টাকা বেড়ে ৮০ টাকা, শসা ৩০ টাকা বেড়ে ৭০, কাঁচামরিচ ছিলো ৬০ টাকা বেড়ে ১০০, লেবু হালিতে ২০ টাকা বেড়ে ৪০-৫০, পটোল ২০ টাকা বেড়ে ৬০, ঢ্যার্ড়স ৩০ টাকা বেড়ে ৮০, পেঁপে ১০ টাকা বেড়ে ৩০ ও টমেটো ১০ টাকা বেড়ে ৩০ টাকা হয়েছে। রমজান মাস শুরুতেই, বাজারের জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাওয়ায়, প্রথম রমজান উপলক্ষে বাজারে গিয়ে চাহিদা মতো সবজি কিনতে না পারায়, বিপাকে পড়েন ক্রেতারা।
এক ক্ষুদ্র সবজি ব্যবসায়ী” নুর মোহাম্মদ বলেন, ‘দাম কম বা বেশির সঙ্গে আমাদের হাত নেই। আমরা যে সময় বেশি দাম দিয়ে কিনি,তখন ক্রেতাদের কাছে ঐ ভাবে কেজিতে ৫/১০টাকা বেশি দামে বিক্রি করি। এসময় -পাশের আরেক সবজি বিক্রেতা কামাল হোসেন বলেন, ‘আমাদের এখানে সবজি আসে যশোর, কুষ্টিয়া, বেনাপোলসহ বিভিন্ন জেলা থেকে। পরিবহন করে। পরিহনের তেল -খরচ বেড়ে গেছে । তা-ই সবজির দামও বাড়তি দিয়ে কিনতে হয়। তাই কী করবো। ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী বাজারে সবজি নেই। তাই এ অবস্থা হয়েছে। বাজার করতে আসা – পৌর শহরের বিসিক এলাকার বাসিন্দা আওয়াল হোসেন বলেন, ‘সবজির দাম এত বেশি বেড়ে গেছে। যে চাহিদা মতো কিনতে পারছি না। নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারের নাগালের বাইরে চলে গেছে। ’ আরেক ক্রেতা শহরের পাঁচখোলা এলাকার লাবণী বেগম বলেন, ‘ কাল থেকে প্রথম রোজা শুরু। তাই পরিবারের জন্য বাজার করতে এসেছি। কিন্তু বাজারের জিনিসপত্রের যেভাবে দাম বেড়ে গেছে। , তাই অল্প কিছু সবজি কিনেছি। এভাবে দাম নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে আমাদের মতো পরিবারগুলোকে না খেয়ে থাকতে হবে।’ এছাড়া – মাছ বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রকারভেদে মাছের দাম কেজিতে ২০০-৩০০ টাকা করে বেড়েছে। মাঝারি সাইজের ইলিশ কেজিতে ২০০ টাকা বেড়ে ১ হাজার, বড় রুই দেড়শ টাকা বেড়ে ৫০০, ছোট রুই ১০০ টাকা বেড়ে ৩০০, চিংড়ি ২০০ টাকা বেড়ে ১ হাজার ও ছোট চিংড়ি দেড়শ টাকা বেড়ে ৭০০ টাকা হয়েছে। এছাড়া গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগি কেজিতে ৩০ টাকা বেড়ে ২৬০, লেয়ার ২০ টাকা বেড়ে ২৮০ ও সোনালি ৪০ টাকা বেড়ে ৩২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মাছ বিক্রেতা মোশাররফ ব্যাপারী রিপন মালো বলেন, ‘মাছের দাম কেজিতে ২০০-৩০০ টাকা করে পর্যন্ত বেড়েছে। আমরা কী করবো। বেশি দাম দিয়ে কিনতে হচ্ছে। তাই আমাদেরও বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।’ খুচরা বাজার মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির সহ-সভাপতি মো. মাসুদ সরদার জাগো নিউজকে বলেন, আমাদের কিছুই করার নেই। হঠাৎ করে মাছের দাম বেড়েছে। কারণ বিভিন্ন আড়ত থেকে বেশি দামে মাছ কিনতে হচ্ছে। তাই আমাদেরও বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। মাদারীপুর মৎস্য আড়তদার বাজার সমিতির সহ-সভাপতি মো. এমদাদ কবিরাজ বলেন, ‘চাহিদা অনুযায়ী বাজারে মাছ কম। এছাড়া পাইকারি দাম অনেক বেড়েছে। এক্ষেত্রে মাছ ব্যবসায়ীদের কী করার আছে। বেশি দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে।’ মাদারীপুর ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমিতির সহ-সভাপতি মো. তাজুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক মো. সিদ্দিক খান জানান, আসলে আমাদের চাহিদামতো পণ্য বাজারে নেই। যে হারে চাহিদা বেড়েছে, সেভাবে পণ্য বাড়েনি। বেগুন, শসার সংকট দেখা দিয়েছে। যেহেতু এই জেলায় সবজি উৎপাদন তেমন নেই। তাই কুষ্টিয়া, যশোর, রাজশাহীসহ বিভিন্ন জেলা থেকে সবজি এখানে আড়তে আসে। তারপর খুরচা ব্যবসায়ীরা সেখান থেকে কিনে বিক্রি করে। তবে এই অবস্থা। তবে দু-তিনদিনের মধ্যেই সামান্য কিছু নিয়ন্ত্রণে আসতে পারে।
@ SOMOYBNGLAR # কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য।