শ্রীনগরে সরকারী খাল দখল করে ফাউন্ডেশন দেয়াল সহ স্থাপন করছে প্রভাবশালী মহল।
রুবেল ইসলাম তাহমিদ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | সময় বাংলার |
শ্রীনগরে খাল দখল করে ফাউন্ডেশন দেয়াল সহ বাথরুমের ট্যাংক স্থাপন করছে প্রভাবশালী মহল ।
ঢাকা মাওয়া বঙ্গবন্ধু এক্সপ্রেসওয়ে, রেললাইন ও পদ্মাসেতু নির্মাণের পর থেকে শ্রীনগরে জায়গা জমির দাম বেড়েছে বহুগুণ । এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে ভূমি খেকোরা মালিকানা জায়গার পাশাপাশি রাস্তা ও খালের পাড়ে থাকা সরকারি জায়গাগুলো দখল করে নিচ্ছে। কোন কোন ঘটনা প্রশাসনের নাকের ডগায় ঘটলেও দেখা হয়না চক্ষু মেলিয়া । তাই সরকার বান্ধব জনগন আক্ষেপের সুরে বলে কারবা গোয়াল কে দেয় ধোঁয়া ! দখলের এমনই একটি চিত্র ধরা পড়েছে পদ্মা ধলেশ্বরীর সংযোগ রক্ষাকারী এক সময়ের শাখা নদী হিসেবে পরিচিত ” শ্রীনগর সৈয়দপুর খালের শ্রীনগর উপজেলা ব্রীজের কাছে। সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ভূমি অফিস ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের মধ্যবর্তি স্থানে মেসার্স রবি ট্রেডার্সের মালিক রবিউল আলম গংরা খাল দখল করে দেয়াল সহ বাথরুমের ট্যাংক স্থাপন করছে। এতে সরকারি জায়গা বেহাতের পাশাপাশি খাল ও নদী রক্ষা আইন যেমন ভূলুণ্ঠিত হচ্ছে , তেমনি পরিবেশের ক্ষেত্রে -ও ঘটবে বিপর্যয় ।
এ বিষয়ে রবিউল আলমের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন , খালের মাঝখান পর্যন্ত আমার জায়গা আছে আর ০৭ শতাংশ। তার এ মালিকানা যাচাইয়ের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মোসারেফ হোসাইনকে অভিহিত করা হলে তিনি ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান।
আজ পাচঁ দিন অতিবাহিত হওয়ার পরও প্রশাসনিক কোন পদক্ষেপ না থাকায় গত ১ ফেব্রুয়ারী উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি সাফফাত আরা সাঈদ কে জানালে তিনি বলেন , ছবিসহ নাম ঠিকানা হোয়াটস এ্যাপে পাঠিয়ে দিন। নাম ঠিকানা ও ছবি পাঠানোর পরও নীরবতা ছাড়া কার্যকর কোন ভূমিকা দেখা যায়নি। উল্লেখ্য যে, শ্রীনগর উপজেলার ছোট বড় প্রায় ২২ টি খাল দখল দূষণের কারণে নাব্যতা হারিয়ে বন্ধ হয়ে গেছে । ঐসব খালের উপর এখন কাচা পাকা বাড়ি ঘর কিংবা মার্কেটের অবস্থান রয়েছে । খাল ব্যাতীত পানি নিস্কাশনের কোন ব্যাবস্থা না থাকার ফলে উপজেলা সদর সহ ১৪ টি ইউনিয়নের প্রত্যন্ত অঞ্চলে বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে জন দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়। বর্তমানে জলাবদ্ধতা নিরসন তথা পানি নিষ্কাশনের একমাত্র মাধ্যম শ্রীনগর – লৌহজং, সৈয়দপুর এই খালটি। একসময় ঢাকা শ্রীনগর, লৌহজং ও গোয়ালন্দ ঘাটের যাত্রী বাহী লঞ্চগুলো যাতায়াত করতো। এছাড়া বোরো মৌসুমে গোয়ালীমান্দ্রা থেকে আলমপুর পর্যন্ত আড়িয়াল বিলসহ খালের দুপাশের ধানি জমিগুলোতে সেচ দেয়া হতো এ খাল থেকেই । কিন্তু দখল দূষণর কারনে নাব্যতা হারিয়ে নদী সদৃশ এ খালটি এখন মৃত প্রায়। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড ২০১৭ সালে খাল খননের উদ্যোগ নিয়ে দুপাশের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করলে ও খাল খনন না হওয়ায় দখলদাররা ফের বহাল তবিয়তে থেকে যায়। শত শত বছরের পুরনো ঐতিহ্য বাহী এ খালটি খননসহ তীরবর্তী অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের জন্য সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন শ্রীনগর উপজেলার পরিবেশ বান্ধব সুশীল সমাজের লোকজন ।