মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধিঃ
করোনা আক্রান্ত হয়ে ঢাকার কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে মারা যাওয়া ব্যক্তির লাশ গোপনে মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানে দাফন করার অভিযোগ উঠেছে। করোনায় মৃত মুফতি মো. আব্দুল্লাহ আল ফারুকীর পরিবার ও আত্মীয়রা কাউকে না জানিয়ে দুই শতাধিক ব্যক্তির উপস্থিতিতে জানাজা দিয়ে দাফন করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। পরবর্তীতে গ্রামে বিষয়টি জানাজানি হলে আব্দুল্লাহ আল ফারুকীর জানাজায় অংশ নেওয়া লোকজনের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। প্রথমে ঘটনার জানার সাথে সাথে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বাড়িটি লকডাউন করে দিয়েছেন। এখন থেকে পুরো এলাকা লকডাউন করার প্রস্তুতি চলছে।
জানা গেছে, নিহত ফারুকী উপজেলার ইছাপুরা ইউনিয়নের পশ্চিম শিয়ালদী গ্রামের মৃত মমতাজ উদ্দিন মুন্সীর ছেলে এবং তিনি আল জামিয়াতুল ইসলামিয়া মুস্তফাগঞ্জ মাদ্রাসায় মুহতাতিম ছিলেন। গত বুধবার ৮ এপ্রিল বিকাল ৬ টার দিকে ঢাকাস্থ কুর্মিটোলা হাসপাতালে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত অবস্থায় মারা যান তিনি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ছাড়পত্রের মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। কিন্তু করোনা আক্রান্তের পর মারা যাওয়ার বিষয়টি মুফতি ফারুকীর পরিবার গোপন করে। তাঁর লাশ নিয়ে ইছাপুরা গ্রামের আল জামিয়াতুল ইসলামিয়া মুস্তফাগঞ্জ মাদ্রাসা মাঠে গত ৯ এপ্রিল বৃহস্পতিবার জানাজা শেষে তাকে দাফন করা হয়।
এদিকে স্থানীয় সাংবাদিকরা তার মৃত্যুর খবর পেয়ে সংবাদ প্রকাশের জন্য তিনি কি কারণে মারা যায় এ বিষয়ে মুফতি মোঃ আব্দুল্লাহ আল ফারুকীর আত্মীয় এবং পরিবারের লোকজনের নিকট জানতে চাইলে তারা বিষয়টি গোপন করে স্ট্রোক করে মারা যাওয়ার মিথ্যা তথ্য দেয়।
মুফতি ফারুকীর ভাতিজা এম. আর. তালুকদার বাবু বলেন, ‘তার চাচা দীর্ঘদিন ধরে ডায়বেটিস ও প্রেসারের রোগী ছিলেন।’
অন্যদিকে গত ৮ এপ্রিল বুধবার মুফতি মোঃ আব্দুল্লাহ আল ফারুকী অসুস্থ্য হলে আত্মীয়রা তাকে প্রথমে একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নেন। পরে সেখান থেকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে তার শরীরে কভিড-১৯ এর উপসর্গ দেখে ডাক্তাররা তাকে কুর্মিটোলা হাসপাতালে পাঠান। সেখানে তার মৃত্যু হলে হাসপাতালের কাউকে না জানিয়ে ওই রোগীর আত্মীয়রা লাশ নিয়ে চলে আসেন বাড়িতে। বাড়িতে লোকজনের উপস্থিতিতে জানাজা দিয়ে দাফন করা হয় ফারুকীকে। করোনা আক্রান্তের বিষয়টি একটি বেসরকারী টিভি চ্যানেলে প্রচার হওয়ার পর গ্রামবাসী জানতে পারেন। বিষয়টি জানার পর মুফতি ফারুকীর জানাজায় উপস্থিত থাকা লোকজন ও স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পরেছে।
এ ব্যাপারে সিরাজদিখান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশফিকুনাহার নয়াদিগন্তকে জানান, ‘বিষটি গত রাতে অবহিত হয়েছি। বাড়িটি লকডাউন করা হয়েছে। কিছুক্ষণের মধ্যে ওই এলাকায় গিয়ে লকডাউনসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবো। পুরো এলাকাই লকডাউন করা হবে।
অপরদিকে জেলা প্রশাসক মো: মনিরুজ্জামান তালুকদার নয়াদিগন্তকে জানান, জানাযা এবং ঐ পরিবারটির সংস্পর্শে যারা এসেছে তাদের সকলকে লকডাউনের আওতায় রাখা হবে।
এ ব্যাপারে সিরাজদদিখান উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা: মো: বদিউজ্জমান নয়াদিগন্তকে জানান, ঢাকা মেডিকেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ যখন সাসপেকটেড কেভিট ১৯ দেখিয়ে ছাড়পত্র দিয়ে স্যাম্পল নিয়ে পরীক্ষার জন্য পাঠায়। পরবর্তীতে রাতে ক্যাভিড ১৯ পজেটিভ আসলে এই রোগীকে আর খুজে পাওয়া যায়নি। এই রুগি করোনা আক্রান্ত হয়েই মারা গেছে বলে তিনি নিশ্চিত করেছেন।
@ SOMOYBNGLAR # কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য।