মুন্সীগঞ্জ থেকে –
প্রতিনিয়ত নতুন নতুন রোগী। বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। সংক্রমণের দিক দিয়ে রাজধানীর কাছের জেলা মুন্সীগঞ্জ হয়ে উঠেছে করোনার হটস্পট। গতকাল বুধবার দুপুর পর্যন্ত এ জেলার ছয়টি উপজেলায় করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ২৮৮ জন। তার ওপর লকডাউন শিথিলের পর জেলার হাটবাজার, শপিংমল, মার্কেট ও রাস্তাঘাট কোথাও সামাজিক দূরত্ব মানছেন না কেউ-ই। এমন পরিস্থিতিতে জেলাজুড়ে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, মুন্সীগঞ্জে গত ১১ এপ্রিল সর্বপ্রথম ১০ জনের দেহে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়। পুরো এপ্রিলে শনাক্ত হয়েছেন ৮০ জন। আর মে মাসে করোনা শনাক্ত হয়েছেন ৬২৯ জন। অথচ জুনের প্রথম ১০ দিনেই আক্রান্ত হয়েছেন ৫৭৯ জন। এর মধ্যে গত মঙ্গলবার একদিনে রেকর্ড সংখ্যক ১৯২ জনের দেহে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। সর্বোচ্চ সংখ্যক ৪৩৬ জনের নমুনা থেকে ওই করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়। এ নিয়ে জেলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে এক লাফে ১ হাজার ২৮৮ জনে দাঁড়ায়। অথচ আগের দিন সোমবার করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১ হাজার ৯৬ জন। জেলায় ৫ হাজার ৮৭১ জনের নমুনার ফল পাওয়া গেছে। তবে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ৬ হাজার ১৮০ জনের। গতকাল বুধবার পর্যন্ত জেলায় মৃত্যুর সংখ্যা ২৯ জন। সুস্থ হয়েছেন ৩২১ জন। সিভিল সার্জন ডা. আবুল কালাম আজাদ বলেন, ভালো থাকতে হলে অতি প্রয়োজন ছাড়া কোনো কারণেই ঘর থেকে বের হওয়া যাবে না। এ মুহূর্তে বাজার ও জনসমায়েত স্থানে না যাওয়াই ভালো। কোনো আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে বেড়াতে বা ঘুরতেও যাওয়া যাবে না। তবেই ভালো থাকব আমরা, ভালো থাকবে মুন্সীগঞ্জ। সূত্র জানায়, জেলা সদরে সর্বোচ্চ করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫৭০ জনে। আক্রান্তে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংখ্যা দাঁড়িয়েছে সিরাজদিখানে ১৭৪ জনে। তৃতীয় অবস্থানে লৌহজং উপজেলায় আক্রান্তের সংখ্যা ১৬৩ জন। জেলার শ্রীনগর উপজেলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১৪৫ জন। তা ছাড়া গজারিয়া উপজেলায় ১৩৩ ও টঙ্গীবাড়ি উপজেলায় ১০৩ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।এদিকে, জীবন ও জীবিকার প্রয়োজনে সরকার দেশজুড়ে লকডাউন শিথিল করেছে। এ অবস্থায় রাজধানীর কাছের এ জেলার সর্বত্র ঘরের বাইরে জনসাধারণের অবাধ বিচরণ লক্ষ করা যাচ্ছে। এতে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি আরও বেড়েছে। এ জেলায় হু হু করে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকায় দেখা দিয়েছে উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা।জেলা প্রশাসক মো. মনিরুজ্জামান তালুকদার বলেন, জীবন ও জীবিকাকে সমন্বয় করেই আমাদের চলতে হবে। আমাদের করোনা ভাইরাস থেকে মুক্ত থাকতে হলে সদা সজাগ থাকতে হবে। মানুষকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। কেউ করোনায় আক্রান্ত হলে আমরা যেন তার প্রতি অমানবিক না হই।