মোঃ রুবেল ইসলাম তাহমিদ মাওয়া মুন্সীগঞ্জ।
পদ্মা সেতু বাংলাদেশ সরকারের অন্যতম বড় চেলেঞ্জের কাঠামো এই কাজের সর্বশেষ বসেছে যে ৪১তম স্প্যানটি, তারপর থেকেই প্রশ্ন গাড়ি চলবে কবে? সর্বশেষ ৪১ তম এ স্প্যান বাসানো ছাড়াও অন্যান্য কাজও এখন এগিয়ে চলেছে সেতুর ।এরমধ্যে সেতুতে রোডওয়ে স্ল্যাব,২হাজার ৯১৭টির মধ্যে স্থাপিত হয়েছে ১ হাজার ৮৮২টির বেশি। রেলওয়ে স্ল্যাব,২হাজার ৯৫৯টির মধ্যে বসতে বাকি অল্প কিছু। এ ছাড়া সুপার-টি গার্ডার ৪৩৮টির মধ্যে বসেছে প্রায় পোনে ৪শ টি। ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের ৪১টি স্প্যান বসিয়ে ৬দশমিক ১৫কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতু নির্মাণ কাজ সম্পুন্ন। কংক্রিট ও স্টিল দিয়ে নির্মিত এ সেতুর কাঠামো।
শিগগিরই বাস্তব রুপ নিতে যাচ্ছে ১৬ কোটিমানুষের অধ্যুষিত দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের বাসিন্দাদের দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্নগুলো।দেশের সর্ববৃহদ মেগাপ্রকল্প পদ্মা সেতুর মূল অবকাঠামোগত নির্মাণপ্রস্তুতি এখন চলছে জোরেশোরে।দেশের সবচেয়ে বড় অবকাঠামো পদ্মা সেতু টি কারিগরি দিক থেকে নিখুঁতভাবে নির্মাণ হয়েছে বর্তমানে চলছে মূল সেতুর ভেতরে রোড স্লাব বসানোর কাজ সহ চারপাশের টুকি টাকি নানা ধরনের কাজ। তবে পদ্মাসেতুর নকশা অনুযায়ী বাকি সব সমস্যা সমাধান হয়ে থাকলেও পৌষের হাড় কাপানো তীব্র শীতের মৌসুমে ঘন কুয়াশায় যান চলাচলের বিষয়টি নিয়ে এবার প্রকৌশলীদের ভাবাচ্ছে ।যেমন উত্তর বঙ্গের যমুনা নদীর ওপরে গড়া দক্ষিণ এশিয়ার ষষ্ঠ বৃহত্তম বঙ্গবন্ধু সেতুতে ঘন কুয়াশায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ার সমস্যা থাকে প্রতি বছর শীত মৌসুমে,তাই পদ্মাসেতুর প্রকৌশলীদের ভাবাচ্ছে মাওযার এই সেতুতেও থাকুক সে ধরনের জটিলতা,তা চান না সংশ্লিষ্ট সেতু প্রকৌশলীরা।সেতু নির্মাণের অন্য সব জটিল দিক গুলো ভাবতে গিয়ে এ বিষয়টিতে নজরে আসে, এর আগে এ ধরনের ঘন কুয়াশা ছন্য জটিলতা, তেমন আলোকপাত সম্ভব হয়নি। এবার বিষয়টি নতুন করে ভাবাচ্ছে প্রকৌশলীদের।বর্তমানে শীত মৌসুমে প্রায়ই বঙ্গবন্ধু সেতুতে যান চলাচল বন্ধ থাকে ঘন কুয়াশার কারণে । তবে পদ্মা সেতুতে ভবিষ্যতে যাতে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি না হয় সে জন্য আলো নাকি রঙ নাকি দুটোরই ব্যবহার করতে হবে এবং কী উপায়ে করতে হবে তা নিয়ে কারিগরি পর্যায়ে শুরু হয়েছে নানা ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা।এখন পর্যন্ত ঘন কুয়াশা দূর করতে বাড়তি আলো ব্যবহারের কোনও পরিকল্পনা নেওয়া হয়নি। তবে আলো ব্যবহার না করে নদীবক্ষের ঘন কুয়াশা এড়ানো সম্ভব হবে কিনা তা যথেষ্টই বিবেচনার দাবি রাখে।বঙ্গবন্ধু সেতু কর্তৃপক্ষের দেয়া ও গণমাধ্যমের তথ্য বলছে,শীতের মৌসুমে গেল ২০২০ শালের ডিসেম্বর ও ২০২১ শালের জানুয়ারি মাসে মাঝে মাঝেই ঘন কুয়াশার কারণে বঙ্গবন্ধু সেতুতে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।সে সময় সেতুর দুই পাড়ে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়। এই যানজট দীর্ঘ ৪০/৪৫ কিলোমিটার যাওয়ার এমন রেকর্ডও আছে। এদিকে পদ্মা সেতু দেশের দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে রাজধানীসহ সারাদেশের যোগাযোগ ও অর্থনৈতিক সেতুবন্ধন তৈরি করবে বলেই সরকারিভাবে ভাবা হচ্ছে।
যমুনা সেতুর দুই যুগ পরে নির্মিত পদ্মা সেতুতেও যদি একই সংকট থেকে যায় তাহলে সেটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হবে না। আর এ বিষয়টিই এখন ভাবাচ্ছে প্রকৌশলীদের।তবে, বঙ্গবন্ধু সেতুর মতো পদ্মা সেতুতেও যেন কুয়াশার কারণে যান চলাচল বন্ধ না থাকে এ সকল উপায় খুঁজছেন প্রকৌশলীরা। কোনও বিশেষ ধরনের লাইটিংয়ের ব্যবস্থা করেই কুয়াশার মধ্যেও যান চলাচলের ব্যবস্থা রাখার উপায় খুঁজছেন তারা।তবে এখনো সমাধান নিয়ে নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারছেন না পদ্মাসেতুর প্রকৌশলীরা।পদ্মা সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী ও প্রকল্প ব্যবস্থাপক (মূল সেতু) দেওয়ান মো. আব্দুল কাদের বলেন, এ বিষয়ে উন্নয়নের লক্ষে কী করার আছে তা আলোচনা চলছে,সিদ্ধান্ত নেয়া হলে পড়ে জানানো হবে। তবে, সম্প্রতি তিনি জানিয়েছেন, আমরা বঙ্গবন্ধু সেতু পরিদর্শনে গিয়েছিলাম। সেখানে দেখেছি সেতুর টোলপ্লাজায় ডিজিটাল ওয়েদার স্কেল রয়েছে।স্কেলে কুয়াশার ঘনত্ব ৪০ রিখটারের নিচে নেমে এলে দুর্ঘটনার আশঙ্কায় সেতুর ওপর দিয়ে যান চলাচল বন্ধ রাখা হয়। তবে পদ্মা সেতুতে ঘন কুয়াশার মধ্যেও যেন গাড়ি চলতে পারে তার জন্য ‘হেভি লাইটের’ ব্যবস্থা করার চেষ্টা করা হচ্ছে। অপারেশন মেইনটেনেন্সের সময় অনেক কিছু সংযোজন হয়। এটা তেমন জটিল কিছু নয়।
তবে, প্রকৌশলীরা বলেন, ঘূর্ণিঝড় বা সাইক্লোনের মতো ঘন কুয়াশাও একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ। ঘন কুয়াশার সময় চীনসহ সারা পৃথিবীতে যান চলাচল বন্ধ থাকে। দেশের সকল সেতুতেও যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। তবে আমরা চেষ্টা করছি বিশেষ লাইটিং ব্যবহারের মাধ্যমে এমন কোনও ব্যবস্থা করার, যাতে আগামী বছর থেকে জনগণের দুর্ভোগ কিছুটা হলেও কমে।এদিকে, পদ্মা সেতুর লাইটিংয়ের ডিজাইন এখনও চূড়ান্ত হয়নি বলে জানা গেছে। প্রক্রিয়া অনুযায়ী, এইকম-এর করা মূল নকশাকে ভিত্তি করে ‘পার্ট বাই পার্ট’ আরও অনেক নকশা করা হয়ে থাকে। সেসব নকশা পরামর্শক প্রতিষ্ঠান যাচাই করার পর বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ (বিবিএ) অনুমোদন করে। এরপরই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সেটা বাস্তবায়ন করে বলে জানা গেছে।
তবে, পদ্মা সেতুর মূল কাজ অর্থাৎ সিভিল কন্সট্রাকশন’-এর কাজ শেষ হওয়ার পর লাইটিংয়ের কাজ শুরু হবে।তবে আন্তর্জাতিক মান কোড মেনেই পদ্মা সেতুতে লাইটিং ব্যবহার করা হচ্ছে। আর্কিটেকচার লাইট ও স্ট্রিট লাইট ব্যবহার করা হচ্ছে। ৩৭.৫০ মিটার পর পর ১২ মিটার উচ্চতার প্রতিটি ল্যাম্পপোস্ট বসানো হবে।তবে ঘন কুয়াশা প্রতিরোধ করার জন্য বিশেষ কোনও লাইটিং ব্যবহার করার ব্যাপারটি প্রস্তাবিত নকশায় নেই।
@ SOMOYBNGLAR # কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য।