সিরাজদিখানে খাসমহল বালুচরের চিটার মোস্তফার বিরুদ্ধে ছিনতাই ও চাঁদাবাজীর মামলা দায়ের।
নিজস্ব প্রতিবেদক:
মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানে খাসমহল বালুচরের ভূয়া,বাটপার-চিটার,দালাল মোস্তফার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের। গোয়েন্দা( ডিবি) পুলিশ পেটানো মামলার ১৬ নং এজাহার নামীয় আসামী নামধারী সাংবাদিক মোস্তফার বিরুদ্ধে ছিনতাই ও চাঁদাবাজীর অভিযোগে আদালতে মামলা করা হয়েছে। সম্প্রতি সিরাজদিখান উপজেলার চিহ্নিত চাঁদাবাজ ও ধান্দাবাজ মোস্তফা বিরুদ্ধে ঢাকার সি, এম, এম আদালতে ৩৮৪/৩৮৫/৩৯২/৫০৬/৩৪ দঃ বিঃ ধারার অপরাধের অভিযোগ এনে মামলাটি দায়ের করেন ভুক্তভোগী শাজ জালাল ওরফে পান কবিরাজ। সে রশুনিয়া ইউনিয়নের পূর্ব রশুনিয়া গ্রামের মৃত আব্দুল মান্নানের ছেলে ও আসামী মোস্তফা উপজেলার খাসমহল বালুচর গ্রামের মৃত ওসমান গনির ছেলে। সাংসদিকতার ব্যনারে কখনো থানার ওসি ও কখনো নির্বাহী কর্মকর্তা, কখনো আবার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কর্তা ব্যক্তির নাম ভাঙিয়ে মানুষের কাছ থেকে অর্থ হাতানোই ছিলো মোস্তফার পেশা। মোস্তফার চাঁদাবাজী, ধান্দাবাজী আর বাটপারীর কৌশলের কাছে দেশের প্রথম শ্রেণীর বাটপার সাহেদকেও যেন হার মানায়।
মামলার এজাহারে আসামী মোস্তফাকে সাংবাদিকতার আড়ালে গোপনে মাদক ব্যবসায়ী, নারীর দালালী ও চাঁদাবাজ উল্লেখ করে বলা হয়, উপজেলার পূর্ব রশুনিয়া গ্রামের বাসিন্দা পান করিবাজ শাহ জালালের সামাজিক ও ধর্মীয় দান দক্ষিনার সংবাদ তার ধলেশ্বরী নামের ফেইসবুক টিভিতে প্রচার প্রচারনার মাধ্যমে শাহ জালালের বিশ্বস্ততা অর্জন করে সে। আর এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে কবিরাজ শাহ জালালের কাছ থেকে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তাকে অতিথি করার কথা বলে কয়েক দফায় হাতিয়ে নেয় কয়েক লাখ লাখ টাকা। এমনকি সিরাজদিখান থানা পুলিশ ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নাম ভাঙিয়ে চাঁদা আদায় করে সাংবাদিক নামধারী মোস্তফা। স্থানীয় কবিরাজ শাহ জালাল তার দেওয়া টাকা সংক্রান্তে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, যে টাকা পুলিশ প্রশাসনের কথা বলে মোস্তফা তার কাছ থেকে নিয়েছে সে টাকা সে নিজেই প্রতারনার মাধ্যমে আত্নসাৎ করেছে। পরে তিনি মোস্তফার সাথে সম্পর্ক চ্ছিন্ন করলে মোস্তফা তার কাছে এককালীন ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবী করে এবং যদি সে টাকা দেয় তাহলে সে কবিরাজী করতে পারবে। আর যদি টাকা না দেয় তাহলে তাকে কবিরাজী করতে দিবে না মর্মে হুমকি প্রদান করে মোস্তফা। শাহ জালাল তাকে চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তার বিরুদ্ধে পবিত্র কোরআন শরীফ অবমাননার অপবাদ দিয়ে অন্যান্য সাংবাদিকদের মাধ্যমে অপপ্রচার চালায়। এক পর্যায়ে স্থানীয় লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে তার বাড়ীঘর ভাংচুর চালায়। এ ঘটনায় শাহ জালাল বাদী হয়ে সিরাজদিখান থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এর কিছুদিন পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে পান কবিরাজের কাছে নিয়মিত চাঁদা দাবী করে। চাঁদা না দিলে তোর বিরুদ্ধে লোক ঠকানো ব্যবসার ব্যপারে বিভিন্ন পত্রপত্রিকার মাধ্যমে প্রকাশ করে তোর সম্মান ধুলায় মিশিয়ে দিবো মর্মে হুমকি প্রদান করে মোস্তফা। শাহ জালাল তার ভাঙচুর হওয়া ঘর বাড়ী মেরামতের জন্য তার পরিচিত এক বড় ভাইয়ের কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা ধার নেওয়ার সময় মোস্তফা সহ তার সহযোগী আরো ৪/৫ জন শাহ জালালকে কিল ঘুষি ও লাথি মেরে রাস্তায় ফেলে দিয়ে তার কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা ছিনিয়ে নেয়। টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার সময় মোস্তফা পিস্তল ও অস্ত্র দেখিয়ে বিষয়টি কাউকে জানালে কিংবা বাড়াবাড়ি করলে খুন করে লাশ গুম করে ফেলার হুমকি প্রদান করে মর্মে মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়।
তুক্তভোগী পান কবিরাজ শাহ জালাল অভিযোগ করে বলেন, আমার কাছ থেকে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন অযুহাতে কয়েক লাখ টাকা হাতে নিয়েছে বালুচরের মোস্তফা। এমনকি সে থানার ওসিকে টাকা না দিলে সে আমার সমস্যা করবে এবং ইউএনও স্যার শিক্ষার্থীদের খেলার জন্য টাকা দিতে বলেছে বলে আমার কাছ থেকে সে টাকা নেয়। পরে আমি জানতে পারি তাদের নাম ভাঙিয়ে সে নিজেই সে টাকা হজম করেছে। এগুলো জানার পরে আমি তার সাথে সম্পর্ক নষ্ট করে দেই। পরে সে আমার বিরুদ্ধে কোনআন শরীফ অবমাননার অপবাদ দিয়ে লোকজন দিয়ে আমার বাড়ীঘর ভাংচুর ও লুটপাট করায় এবং মাসিক চাঁদা দাবী করে। চাঁদা দিলে কবিরাজী করতে পারবি নাইলে কবিরাজী করতে পারবি না মর্মে হুমকি দিলে আমি তার বিরুদ্ধে ঢাকার সিএমএম আদালতে মামলা করেছি এবং আমি তার যথাযথ বিচারের দাবী জানাই।
এদিকে স্থানীয় সাংবাদিক আনিছুর রহমান রুবেল (নিলয়) জানান, তাকে সিরাজদিখান প্রেসক্লাবের বৈধ কমিটির পক্ষে ফেইসবুক স্ট্যাটাস দেওয়ায় প্রানে মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছিলো মোস্তফা। সিরাজদিখান প্রেসক্লাবের একাধিক সাংবাদিকসহ সিরাজদিখান উপজেলায় কর্মরত বেশ কয়েকজন সাংবাদিক মোস্তফার অপকর্মের বিরুদ্ধে অবস্থান নিলেও সিরাজদিখান উপজেলার কয়েকজন তার পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। তারা এমন অভিযোগ তুলে বলেন, একসময় যারা মোস্তফাকে ধান্দাবাজ বলে পরিচয় করিয়ে দিতো আজ তারা তাকে নিজেদের কোলে তুলে নেচেছে। সিরাজদিখানে মোস্তফার কোন ঠাই নেই। কেউ যদি তাকে ঠাই দেয় তাহলে তার সাথে আমাদের বোঝাপড়ার বিষয় আছে।
@ SOMOYBNGLAR # কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য।